ফের গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল রাজ্যে। এ বার মালদহের ইংরেজবাজারে এক আদিবাসী নির্মাণ শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তাঁরই পরিচিত এক যুবক-সহ চার জনের বিরুদ্ধে।
ঘটনার সাত দিন পর বৃহস্পতিবার গ্রামবাসীদের সাহায্যে ইংরেজবাজারের ফুলবাড়ি মোড়ের মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। এ দিনই দুই অভিযুক্তকে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেন গ্রামের মানুষ। বাকি দু’জন এখনও বেপাত্তা। নির্যাতিতাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। পুলিশ এই ঘটনায় সালিশি করে মিটমাটের চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ দায়ের হয়েছে মহিলা থানাতে। পুলিশ কোনও সালিশি করেনি।” ধৃত প্রণয় হালদার ও অসীম পাহাড়ি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে। ফেরার দুই অভিযুক্তও একই পেশায় জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। বছর দশেক আগে স্বামী মারা গিয়েছেন মধ্য ত্রিশের ওই মহিলার। তাঁর দুই ছেলে। বড় জন একটি আবাসিক স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ছেলেটি ওই স্কুলেরই
অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। বাড়িতে মহিলা একাই থাকতেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকার যুবক রেশন পাহাড়ির সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। অভিযোগ, গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যের পরে রেশনের সঙ্গে গ্রামের একটি মাঠে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন ওই মহিলা। সেই সময় তিন যুবক তাঁকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। মহিলা প্রতিবাদ করলে তাঁকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। এর পরে পরিচিত যুবকের সামনেই তিন যুবক তাঁকে পরপর ধর্ষণ করে বলে মহিলার অভিযোগ। ভয়ে, লজ্জায় ঘটনার কথা প্রথমে গ্রামের কাউকেই বলেননি তিনি। পরে গ্রামের কিছু বাসিন্দা বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁরা পাশে থাকার আশ্বাস দিলে অভিযোগ জানানোর সাহস পান নির্যাতিতা। এর মধ্যেই অবশ্য রেশন ও আর এক অভিযুক্ত পালিয়ে গিয়েছে।
ওই মহিলা বলেন, “আমার ছেলেরা ভাল স্কুলে পড়ে। এ সব নিয়ে অভিযোগ করলে ছেলেদের উপরে প্রভাব পড়তে পারে ভেবে প্রথমে থানায় যাইনি। পরে বাসিন্দারা পাশে দাঁড়ানোয় সাহস পেয়েছি।”
গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের মৃদুল পাহাড়ি জানান, ঘটনাটি তাঁরাও জানতেন না। বুধবার রাতে সব কথা জানার পরে সঙ্গে সঙ্গেই মহিলাকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা।