টানা চেষ্টার পরও তোলা গেল না হাতিটিকে। —নিজস্ব চিত্র।
দিনভর চেষ্টা করেও অসফল। সকাল থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে চিকিৎসার পর অসুস্থ হাতিকে কোনও ভাবেই গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যেতে পারলেন না বনকর্মীরা। টানা ৯ ঘণ্টার চেষ্টা ৪টি কুনকি হাতির সাহায্যে অসুস্থ হাতিটিকে লরিতে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা বিফল হল।
এক মাসের বেশি সময় থেকে অসুস্থ এই হাতিটি নাথুয়া রেঞ্জের খেরকাটা জঙ্গলে রয়েছে। শুক্রবার তার চিকিৎসার জন্য দু’জন পশুচিকিৎসককে নিয়ে আসা হয়। এর পর কুনকি হাতির সাহায্যে জেসিবি ব্যবহার করে লরিতে তোলার চেষ্টা হয় হাতিটিকে। কিন্তু অর্ধেকটা উঠেও লরি থেকে নেমে যায় হাতিটি। তার পরে বহু চেষ্টা করেও তাকে আর তোলা সম্ভব হয়নি।
আগের চেয়ে হাতিটির শারীরিক অবস্থা এখন ভাল বলে তাকে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল বন দফতরের। জাতীয় উদ্যানে নিয়ে গিয়ে আরও ভাল চিকিৎসা করানোই ছিল লক্ষ্য। তাই বৃহস্পতিবার জেসিবি মেশিনের সাহায্যে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বড় গাড়ি করে হাতিটিকে তার নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা হয়েছিল। গরুমারা জাতীয় উদ্যান থেকে আনা হয়েছিল ফুলমতি, ভোলানাথ এবং কাবেরী নামে তিনটি হাতিকে। গধেয়ারকুঠি বিট থেকে আনা হয় মিতালি নামে হাতিটিকে। জঙ্গলের বাইরে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে হাতি উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির ডিএফও ভি বিকাশ, জলপাইগুড়ির ওয়াইড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী, দুই সহকারী বনাধিকারিক এবং চারটি রেঞ্জের বনকর্মীরা। এ ছাড়়া মোরাঘাট, নাথুয়া, ডায়না, খুনিয়া রেঞ্জের বনকর্মীরা ছিলেন পাহারার দায়িত্বে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাতিটিকে ওখানে রেখেই ফিরে যেত হল সবাইকে।
সন্তোষ রায় নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে হাতিটি এখানে আছে। শুক্রবার হাতিটিকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিয়ে যেতে চেয়েছিল বন দফতর। লরি, কুনকি হাতি থেকে জেসিবি মেশিন, সব নিয়ে এসেছিল ওরা। কিন্তু তাও হল না। আমরা সবাই চাই, হাতিটির ঠিকমতো চিকিৎসা হোক।’’ জলপাইগুড়ি ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরীর বলেন, ‘‘হাতিটির সুচিকিৎসার জন্য গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হবেই। কিন্তু সেটা শুক্রবার অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও হয়ে উঠল না।’’