Malbazar Flash Flood

এই বিপর্যয়ে আমাকে, আমাদের মূল্য দিতে হল

উত্তরবঙ্গে সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ বর্ষার শেষ লগ্নে তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই একটু বেশি থাকে। বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পও থাকে।

Advertisement

গোপীনাথ রাহা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪২
Share:

মাল নদীতে আসা হরপা বান। — ফাইল চিত্র।

হড়পা বান তাৎক্ষণিক ভাবেই ঘটে। জলস্তর আচমকা অতি দ্রুত বাড়ে বলে এটি সাধারণ বন্যার তুলনায় অনেক বেশি বিপজ্জনক। এই বানের নেপথ্যে কয়েকটি কারণ থাকে। যেমন, অল্প সময়ের মধ্যে (সাধারণত ছয় ঘণ্টার কম) ভারী বা অতিভারী বৃষ্টি, প্রকৃতির ধ্বংসলীলা বা মানুষের তৈরি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ঘটে থাকে। হড়পা বান পাহাড়ি অঞ্চলে এলে তার মারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়। পাহাড় বেয়ে জলের স্রোত নামায় জলের সঙ্গে নুড়ি পাথরের ভরবেগও বেড়ে যায়।

Advertisement

উত্তরবঙ্গে সেপ্টেম্বরের শেষে বা অক্টোবরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ বর্ষার শেষ লগ্নে তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই একটু বেশি থাকে। বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পও থাকে। ফলে তখন বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চারিত হয়ে বজ্রপাত, সঙ্গে কম সময়ে জোরালো বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। সেই বৃষ্টি কোনও নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় বেশি পরিমাণে হলে হঠাৎ নদীর জলস্তর অনেকটা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তিস্তা বা এ রকম কিছু নদী বাদে উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ নদীই বৃষ্টির জলে পুষ্ট। ফলে শুষ্ক আবহাওয়ায় এই নদীগুলির কিছুটা অংশ বাদে জল প্রায় থাকে না বললেই চলে। কিন্তু যখন এ সব নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়, তখনই তার জলস্তর বাড়তে থাকে। বৃষ্টি তীব্র হলে বা যাত্রাপথের কোথাও বাঁধ ভেঙে গেলে তার ফল মারাত্মক।

দশমীর রাতে মাল নদীতে হড়পা বানের পিছনে অতিবৃষ্টিই কারণ কিনা, সেই খবরাখবর মেলেনি আশপাশের বৃষ্টিপাত পরিমাপ কেন্দ্রগুলি থেকে। তবে কেন্দ্রগুলির মধ্যবর্তী কোনও স্থানেও যে ভারী বৃষ্টি হয়েছে, নাকি হয়নি তাও নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। এই বিপর্যয়ের নেপথ্যে প্রকৃত কারণ কী তা কে জানে!

Advertisement

যা-ই হোক, এই বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয় সেটাই নিশ্চিত করা জরুরি। যদিও এটা উপলব্ধি করতে আমাকে, আমাদের বড্ড বেশি মূল্য দিতে হল।

লেখক: দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক, কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর, সিকিম

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement