প্রতীকী ছবি।
ভোটের ঠিক আগে পুলিশ বা আধা সামরিক বাহিনী নির্দিষ্ট এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। নিবার্চন কমিশনের ভাষায এটাকে বলে, ‘এরিয়া ডমিন্যান্স’। কিন্তু ভোটের অনেক আগেই শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক দলগুলির এলাকা নিয়ন্ত্রণের লড়াই। এলাকার নিয়ন্ত্রণ বা দখল বোঝাতে শুরু হয়েছে দলীয় ঝান্ডা লাগানো। দার্জিলিং জেলার পাহাড়ে বরাবর তা দেখা গিয়েছে। কিন্তু ভোটের দিন ঘোষণা না হতেই সমতলে এমনটা এই প্রথম দেখা গেল।
প্রথমে বিজেপি, তার পরে তৃণমূলের সঙ্গে শিলিগুড়িতে পাল্লা দিচ্ছে সিপিএমও৷ এই ঝান্ডা-যুদ্ধে গোলমাল এড়াতে বাড়ছে পুলিশি নজরদারি৷
দলীয় সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়ির নেতাদের নিয়ে উত্তরকন্যার বাংলোয় বৈঠক করেন। সেখানে শিলিগুড়িতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই ছাড়াও প্রতিটি বুথ এলাকায় ধাপে ধাপে ১০০টি করে পতাকা টাঙানোর কথা বলেছেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত কর্মীদের তা নজর রাখার কথাও বলা হয়। কয়েকদিনের মধ্যে বামেদের তরফেও একই ঘোষণা করা হয়েছে। শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য বুথে বুথে লাল পতাকা রাখার দলীয় সিদ্ধান্তের কথা বলেছেন। এর আগেই অবশ্য এই পথে ধীরে ধীরে হাঁটা শুরু করেছে বিজেপি।
শিলিগুড়ি শহরে মূল লড়াই সিপিএম, বিজেপি সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। তাই ঝান্ডার লড়াইয়ে কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না। ইতিমধ্যে শহরের মূল রাস্তাগুলিতে নানা দলের পতাকা ঝোলানো শুরু হয়েছে। বিজেপির পাশে তৃণমূল বা তৃণমূলের পাশে লাল পতাকাও দেখা যাচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতারা জানাচ্ছেন, এখন পুরোটাই প্রচার, বিজ্ঞাপন, ব্র্যান্ডিংয়ের যুগ। সঙ্গে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। কোনও এলাকায় লাল বা গেরুয়া পতাকা ছেয়ে থাকলে সাধারণ মানুষের কাছে মনে হতে পারে, সেই দল সেখানে শক্তিশালী, বা তাঁরা জোরদার হয়ে উঠেছে এলাকায়। অথচ খোঁজ করলে দেখা যাবে, আদতে তা নয়। নির্দিষ্ট এলাকায় নিজেদের জোরদার দখল বা উপস্থিতি প্রমাণ করতে এই পদ্ধতি নেওয়া চলছে।
তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত যেমন বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের নেতৃত্বের নির্দেশ রয়েছে পরপর কিছু কর্মসূচি জানুয়ারি ধরে। সেখানে বুথে বুথে পতাকা লাগানো অন্যতম।’’
আবার বাম বিধায়ক অশোকবাবু বলেছেন, ‘‘শহরের মানুষের সঙ্গে আমাদের সারা বছরের যোগাযোগ। ভোট আসে ভোট যায়। আমরা ওয়ার্ড ধরে ধরে সভা, নাগরিক সমস্যা শুনে কাজ করছি। তেমনিই, বুথে বুথে নিজের উপস্থিতি বোঝাতে পতাকা তো থাকবেই।’’
এই অবস্থায় গোলমালের আশঙ্কা করছে শিলিগুড়ি পুলিশের একাংশ। কমিশনারেটের দুই শীর্ষ কর্তা জানান, এ বার ভোটের দিন ঘোষণা না হতেই পতাকা নেমে পড়েছে। তাতে ধাক্কাধাক্কির সম্ভাবনা তো থাকেই। তাই থানায় থানায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলে দেওয়া হয়েছে।