ফাইল চিত্র।
যে কথা, সেই কাজ।
সন্ধ্যা পার হতেই শিলিগুড়ি যেন ভুলে গেল, বাজি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট এবং রাজ্যের কিছু বিধি নিষেধ ছিল। আশিঘর ফাঁড়ি এলাকা থেকে শুরু করে প্রধাননগর, বাগডোগরা, এনজেপির বিভিন্ন জায়গায় কেবল বাজিই নয়, শব্দবাজিও ফাটল দাপুটে বাজি ভূতেদের কল্যাণে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই বলছেন, এত দিন ধরে ওঠা অভিযোগ সত্যি প্রমাণ করে দিল বাজির ধোঁয়া আর শব্দ। একই সঙ্গে বাজি ব্যবসায়ীদের থেকে থেকে তো বটেই, কিসানগঞ্জ এবং বিহারের দিক থেকে শব্দবাজিও যে শহরে ঢোকা আটকাতে পারেনি পুলিশ, তা-ও যেন স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকর্তারা কিছু বলতে চাননি।
বিকেল তখন সাড়ে পাঁচটা। আশিঘর ফাঁড়ির বাইপাসের লাগোয়া গলিতে বাচ্চারা শব্দবাজি ফাটাতে শুরু করেছে। মোড়ে পুলিশ থাকলেও টহলদারি ভ্যান নজরে এল না। এর পর আসতে লাগল পরের পর অভিযোগ। জানা গেল, প্রধাননগর থানার একাধিক এলাকায় বাজি ফেটেছে বিনা বাধায়। বাজি ফাটার শব্দ শোনা গিয়েছে, সুভাষপল্লি বাজারে। বাদ ছিল না খালপাড়া, নয়াবাজার, পাঞ্জাবীপাড়া, আশ্রমপাড়া, মিলনপল্লির মতো এলাকাও। শহর লাগোয়া উত্তরায়ন উপনগরী, শিবমন্দির, শক্তিগর, গেটবাজার, দেশবন্ধু পাড়া এবং স্টেশন ফিডার রোডেও প্রচুর বাজি ফাটার অভিযোগ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
অভিযোগ উঠেছে, গুরুং বস্তি এবং কিরণচন্দ্র শ্মশানঘাট লাগোয়া এলাকায় সন্ধে থেকেই বাচ্চারা শব্দবাজি ফাটাতে শুরু করে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই শহরে এই ঘটনা বেড়েছে। লঙ্কাপটকার জায়গা নিয়েছে দাপুটে চকলেট বোম। আতশবাজি অতটা না দেখা গেলেও শব্দবাজির দাপটই বেশি ছিল বলে দাবি শহরবাসীর। পুলিশের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় তারা টহল দিয়েছে। বাজি বিক্রির অভিযোগে রাতে মাটিগাড়া থানা এলাকা থেকে এক জন এবং ভক্তিনগর থানা এলাকা থেকে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিলিগুড়ি থানার মহাবীরস্থানে অভিযান চালিয়ে ২০০ কেজি বাজি উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার দু’জন। কিন্তু বাগডোগরা, প্রধাননগর এলাকা থেকে রাত পর্যন্ত তেমন গ্রেফতার ছিল না। অথচ, আপার বাগডোগরা বাজারে প্রকাশ্যে তুবড়ি জ্বালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী, বাজির সবচেয়ে বেশি দাপট দেখা গিয়েছে, প্রধাননগর থানার শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির স্কুলের পিছনের পাড়া এবং সমরনগরের দিকেও। অভিযোগ, একাধিক বাড়ি থেকে শব্দবাজি ফাটানো হয়। রকেটও ছুড়তে দেখা গিয়েছে। এ দিন চম্পাসারি-মিলন মোড় রোডে উত্তর মাল্লাগুড়ি এলাকায় একটি কালী মন্দিরের সামনে দেখা গেল, মোতালেন এক জন পুলিশকর্মী। কিন্তু তা থেকে মাত্র ৬০ মিটারের মধ্যে একদল বাচ্চা দীর্ঘ সময় ধরে শব্দবাজি ফাটালেও তা নিয়ে তাঁর হেলদোল ছিল না বলে অভিযোগ। এক কিশোরকে জিজ্ঞাসা করায় উত্তর এল, ‘‘দিওয়ালি মে বোম নেহি ফোড়েগা, তো কেয়া করেগা?’’