মেয়াদ ফুরোনো যন্ত্র, করিডর যেন জতুগৃহ

দমকল থেকে বারবার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে বলা হলেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পড়ে রয়েছে অন্ধকারেই। বছরের পর বছর ধরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪৫
Share:

দু’বছর আগেই মেয়াদ ফুরিয়েছে।— নিজস্ব চিত্র

দমকল থেকে বারবার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে বলা হলেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পড়ে রয়েছে অন্ধকারেই। বছরের পর বছর ধরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

হাসপাতালের চিকিৎসক-কর্মীদের অনেকের উদ্বেগ, বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড। বিশেষ করে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট, আইসিইউ, সিসিইউ, রেডিওথেরাপি, রেডিওলজি, মাইক্রোবায়োলজির ল্যাবরেটরির মতো ইউনিটগুলি যেখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বা এসি রয়েছে। এসি থেকে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি। এ দিকে অধিকাংশ ওয়ার্ড থেকে বেরনোর একটিমাত্র পথই ভরসা। তা ছাড়া যে ভাবে করিডরে অক্সিজেনের সিলিন্ডার অনেক সময় ফেলে রাখা হয়, তা বিপজ্জনক বলে মনে করেন অনেকেই। মাসখানেক আগে স্বাস্থ্য ভবন থেকেও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা গড়তে খরচের হিসেব চাওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে। এখনও তাঁরা তা পাঠাতে পারেননি বলে অভিযোগ।

মুর্শিদাবাদের ঘটনার পরে উদ্বেগ বেড়েছে সব মহলেই। মেডিক্যালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, ‘‘অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থায় ঘাটতি থাকলে পূরণ করা হবে। পরিকাঠামো ঢেলে সাজার কাজ আগেই শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’

Advertisement

আমরি-কাণ্ডের পর হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পরেও কর্তৃপক্ষের যে হেলদোল নেই তা স্পষ্ট। মেডিক্যালের অধ্যক্ষের ঘরের সামনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে পড়েছিল। তাঁর দাবি, দিন কয়েক আগে তা নজরে পড়তেই ‘রিফিলিং’ করাতে এবং পুরনো সিলিন্ডার সরাতে বলেছেন তিনি। দিন পনেরো আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন দমকলের আধিকারিকেরা। কী কী করণীয় সে ব্যাপারে ফের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু কবে সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে তার সদুত্তর মেলেনি কর্তৃপক্ষের তরফে।

মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, ‘‘খরচের হিসেব এলে শীঘ্রই স্বাস্থ্যভবনকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ তবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে শীতাতপ যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার বিষয়টি নিয়ে তাঁরা যে উদ্বিগ্ন, তাও তিনি জানান। ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কী কী পরিকাঠামো গড়তে হবে তা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেগুলি দ্রুত গড়ে তোলা প্রয়োজন।’’

দমকল এবং হাসপাতালের একটি সূত্রই জানিয়েছে, আগুন লাগার ঘটনা মোকাবিলা করতে ক্যাম্পাসে অন্তত দু’টি বড় জলাধার করতে বলা হয়েছে। একটি হাসপাতালের অংশে, অপরটি কলেজের দিকে। বর্তমানে আগুন নেভানোর কাজের উপযুক্ত কোনও জলাধার নেই ক্যাম্পাসে। মাস দেড়েক আগে দমকলের তরফে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীদের একাংশকে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা কী ভাবে কাজ করবে তা হাতে কলমে শেখানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement