ঘটনাস্থল পরিদর্শনে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র
রবীন্দ্রনগরের অগ্নিকাণ্ডে আগুন নেভানোর খরচ হিসেবে দমকল দফতরকে প্রায় ৫৫ হাজার টাকা দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। বুধবার ভোরে আগুন লেগে ওই এলাকায় ৯টি দোকান পুরোপুরি পুড়ে গিয়েছে। পাঁচটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নিভিয়েছিল। সেই টাকাই ব্যবসায়ীদের দিতে হবে বলে দমকলের আধিকারিকরা তাঁদের বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন। এর জেরে ক্ষোভ ছড়িয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে। ওই টাকা দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন তাঁরা। দমকলের দাবি, বিধি মেনেই বাণিজ্যিক হারে এই টাকা নেওয়া হয়।
রবীন্দ্রনগরের ব্যবসায়ীদের দাবি, তাঁদের সর্বস্ব পুড়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে ফের ব্যবসা দাঁড় করাতেই অনেক সময় লাগবে। আগুন নেভানোর খরচ কী ভাবে দেবেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। রবীন্দ্রনগর-রথখোলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত কুণ্ডু বলেন, ‘‘নয় জনের মধ্যে তিন ব্যবসায়ীর বিমা ছিল। বাকিরা কোনওরকমে দোকান চালিয়ে সংসার টানতেন।’’ কিছুদিন আগে চম্পাসারিতে ৭টি দোকান এবং গতবছর পুজোর আগে জংশনে পুড়ে গিয়েছিল ১৪টি দোকান। সেগুলির মালিকদের কাছেও আগুন নেভানোর খরচ নিয়েছিল দমকল।
দমকল আধিকারিকরা দাবি করেন, সরকারি বিধি অনুসারে টাকা নেওয়ার নিয়ম দীর্ঘ দিনের। শিলিগুড়ির ভারপ্রাপ্ত ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার দেওয়ান লেপচা বলেন, ‘‘আমরা দেখব, ব্যবসায়ীদের কতটা ছাড় দেওয়া যায়। তবে টাকা নিতেই হবে।’’ দমকলের তরফে ব্যবসায়ীদের কাছে তাঁদের দোকানের নথি চাওয়া হয়েছে। নথি গোলমাল থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দমকল কর্তাদের। সিপিএমের তরফে গতকালই অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সরকারি পরিষেবা কেন বিনামূল্যে হবে না তা নিয়ে। এ দিন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। বিরোধী দলনেতা বুধবারই অভিযোগ তুলেছিলেন অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিয়ে পুরসভার গাফিলতির রয়েছে বলে। এ দিন মেয়র বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা এমনিতেই সাহায্যের জন্য আমাদের বলেছেন। এর মধ্যে আবার দমকল টাকা নিলে কী ভাবে হবে।’’ বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে তাঁর দাবি, কোথায় আগুন লাগবে তা নিয়ে তো পুরসভা ইন্সপেক্টর বসিয়ে রাখতে পারে না।
শিলিগুড়ির বাজারগুলি নিয়ে যাতে সার্বিক কোনও বিমার ব্যবস্থা করা যায় বা বাজারের কাছে জলাধার তৈরি করা যায় তা নিয়ে পুরসভার আরও সচেতন হওয়ার দাবি তুলেছে বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরো বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের নেতা বিপ্লব রায় মুহুরি বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের আমাদের সঙ্গে এ সব নিয়ে বৈঠকে বসা উচিত।’’ দোকানগুলি একটি বেসরকারি জমিতে ছিল। এ দিন সেটির মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দোকানিরা। তাঁরা জানান, সরকারি জায়গা দখল না করে রায়ত জমির মধ্যেই স্থায়ী নির্মাণ হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আগে যেরকম দোকান ছিল, সেরকমই পুনর্নির্মাণ করে চালাবেন ব্যবসায়ীরা।