বামেদের ১৫ সদস্য তৃণমূলে, সমিতি হাতছাড়া

দল ভাঙার খেলায় ফের সফল তৃণমূল। মালদহের গাজল পঞ্চায়েত সমিতির দখল নিল তৃণমূল। সোমবার বিকেলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি সহ মোট ১৫ জন পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিলেন তৃণমূলে। এদিনই দুপুরে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা দল থেকে ইস্তফা দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে এবং মহাকুমাশাসকের কাছে চিঠি দেন। এরপরে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন তৃণমূলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০২:০৮
Share:

দল ভাঙার খেলায় ফের সফল তৃণমূল। মালদহের গাজল পঞ্চায়েত সমিতির দখল নিল তৃণমূল। সোমবার বিকেলে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি সহ মোট ১৫ জন পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিলেন তৃণমূলে। এদিনই দুপুরে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা দল থেকে ইস্তফা দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে এবং মহাকুমাশাসকের কাছে চিঠি দেন। এরপরে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন তৃণমূলে।

Advertisement

এই ঘটনার পরে বামেরা দলত্যাগীদের বিশ্বাসঘাতক বলে কটাক্ষ করেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মৈত্র বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। ওই সদস্যেরা দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই বিষয়ে আমরা খুব শ্রীঘই লিফলেট বিলি করব।’’

গাজল পঞ্চায়েত সমিতি ৪২টি আসন নিয়ে গঠিত। তার মধ্যে সিপিএম একক ভাবে পেয়েছিল ২৫টি আসন এবং সোসালিস্ট পার্টি পেয়েছিল দুইটি আসন। এ ছাড়া তৃণমূলের দখলে ছিল ৮টি এবং কংগ্রেসের দখলে ছিল সাতটি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বামেরা একক ভাবে বোর্ড গঠন করেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন প্রভাত পোদ্দার এবং সহ সভাপতি হন রতন রায়। তবে এদিন প্রভাতবাবু এবং রতনবাবু সহ বামেদের ১৫ জন সদস্য জেলার দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দল থেকে ইস্থফা দেন। একই সঙ্গে তাঁরা নির্দল সদস্য হিসেবে নিজেদের দাবি ঘোষণা করে মহাকুমাশাসককেও চিঠি দেন।

Advertisement

এদিনই গাজলের একটি হোটেলে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভা ছিল। সেই সভায় গিয়ে ১৫ জন মিলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন গাজলের তৃণমূলের বিধায়ক সুশীল রায়, যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি, তৃণমূলে ব্লক সভাপতি জয়ন্ত ঘোষ প্রমুখ। গাজলের বিধায়ক সুশীল রায় বলেন, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থে এদিন সিপিএম ছেড়ে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা তৃণমূলে যোগদান করলেন। এর ফলে ব্লকের আরও উন্নয়ন হবে।’’

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা দলত্যাগী প্রভাত পোদ্দার বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আমরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। সম্প্রতি উন্নয়ন করতে বাধা দিচ্ছিল সিপিএম নেতৃত্ব। স্বাধীন ভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যাচ্ছিল না। তাই আমরা দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। এই বিষয়ে আমরা জেলা নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েও জানিয়েছি। এমনকি জেলা প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।’’ যদিও দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম নেতা রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘‘টাকার কাছে তাঁরা বিক্রি হয়ে গিয়ে দল ছাড়লেন। এর জবাব মানুষই তাঁদের দেবে আগামী দিনে।’’

গাজল বরাবরই সিপিএমের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বরাবরই সিপিএমের প্রভাব রয়েছে এই জেলায়। রাজ্যের পরিবর্তনের পরেও এই জেলায় পঞ্চায়েত সমিতি ছিল বামেদের দখলে। বামেরা একক ভাবে ৪২টির মধ্যে ২৭টি পেয়ে বোর্ড গঠন করেছিল। এ ছাড়া জেলাতে ১৫টি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে অধিকাংশ পঞ্চায়েত রয়েছে বামেদের দখলে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে পঞ্চায়েত সমিতি হাত ছাড়া হওয়ায় কার্যত ব্লকে কোণঠাসা হয়ে পড়ল বামেরা। এই ব্লকে তৃণমূলের কোনও প্রভাবই ছিল না। বছর দু’য়েক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বিধায়ক সুশীল রায়ও। তবে তৃণমূলের তেমন সংগঠনও গড়ে উঠেনি বলে দাবি রাজনৈতিক মহলে। এমন পরিস্থিতিতে বামেদের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় দল আরও শক্তিশালী হবে মনে করছেন নেতৃত্বরা।

এদিন বামেদের পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে দল ছেড়েছেন স্মৃতি হালদার, রসিদা বিবি, তাপসী রায়, মিনতি মাহালী, মাখনলাল দাস, শুল্কা বিশ্বাস, সঞ্জিত সিংহের মতো একাধিক সদস্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement