প্রতীকী ছবি
জ্বরে আক্রান্ত এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হল শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোমে। জলপাইগুড়ির সেনপাড়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি দীপক দাস (৭০) বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন জ্বরে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বাড়ির লোকেরা জানাচ্ছেন, অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল রেফার করে দেওয়া হয়। এরপরে মেডিক্যালে না নিয়ে গিয়ে শনিবার সন্ধেয় শিলিগুড়ি ওই নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় বৃদ্ধকে। রবিবার গভীর রাতে মারা যান তিনি। পরিবারের দাবি, ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছে দীপকবাবু।
যদিও নার্সিংহোম থেকে দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্রে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি লেখা হয়নি। শ্বাসকষ্ট জনিত একাধিক সমস্যার কারণে মৃত্যু বলে লেখা হয়েছে, এমনটাই জানাচ্ছে বাড়ির লোক। নার্সিংহোম সূত্রে খবর, ভর্তি হওয়ার পরেই রক্ত পরীক্ষা করানো হয় দীপকবাবুর। জ্বর থাকায় করা হয়েছিল ডেঙ্গি পরীক্ষাও। এরমধ্যেই অবস্থার অবনতি হয়ে রবিবার গভীর রাতে মারা যান তিনি। এই সময়ের মধ্যে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট আসেনি বলে নার্সিংহোমের একটি সূত্রের দাবি। মৃতের ভাই পল্টু দাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গি পরীক্ষাও করানো হয়েছিল। সেই রিপোর্ট হাতে পাইনি। আমাদের সন্দেহ ডেঙ্গিতেই দাদার মৃত্যু হয়েছে।’’ দিনবাজারের দোকান চালাতেন দীপক দাস। সোমবার সকালে তাঁর দেহ সেনপাড়ার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
সেনপাড়ার যে এলাকায় দীপক দাসের বাড়ি, সেখানে বেশ কিছু বাড়িতেই জ্বরের রোগী রয়েছেন। সূত্রের খবর, বর্তমানে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে তিন জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছেন। পাশেই শিলিগুড়ি শহরে দীর্ঘ দিন ধরেই ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দীপকবাবুর মৃত্যুতে আতঙ্কে জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও জেলা স্বাস্থ্য দফতর ডেঙ্গির কথা মানতে চায়নি। জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “জলপাইগুড়িতে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর কোনও খবর নেই।”
সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি শহরের বেসরকারি নার্সিংহোমেও কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ভর্তি রয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই বাইরে থেকে ডেঙ্গির জীবাণু নিয়ে ফিরেছেন। যদিও দীপক দাস সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে শহরের বাইরে কোথাও যাননি বলে দাবি পরিবারের। অভিযোগ, জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়া, রায়কতপাড়া-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকার বাড়িতে জ্বরে আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি ভাবে জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন বলে সূত্রের খবর।
জলপাইগুড়ির চিকিৎসক সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই জ্বর নিয়ে রোগীরা আসছেন। কয়েকজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণুও মিলেছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ৩ জন জলপাইগুড়ির এক নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন।’’