আগুন আতঙ্কে শিশু বুকে নামলেন আকুল মা

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরপর এমন ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষদের মধ্যে। অনেকেই অভিযোগ করেন, এমন ঘটনা বারবার সামনে আশায় মেডিক্যালের উপরে ভরসা কমছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৬
Share:

আতঙ্কিত: আগুনের ভয়ে সদ্যোজাতকে-সহ মা’কে বের করে আনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

দিন কয়েক আগেই পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ নিয়ে ধুন্ধুমার হয়েছে। তার আগে পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি এক শিশুর মৃত্যুতেও গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এ বারে বৃহস্পতিবার মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে আগুন লেগে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শতাধিক নবজাতককে কোলে করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাসপাতাল ছাড়তে হয় মায়েদের। এমনকি বিশেষ বিভাগে চিকিৎসারত গুরুতর অসুস্থ শিশুদেরও একই ভাবে বের করে আনা হয়।

Advertisement

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পরপর এমন ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষদের মধ্যে। অনেকেই অভিযোগ করেন, এমন ঘটনা বারবার সামনে আশায় মেডিক্যালের উপরে ভরসা কমছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, সব সময়ই ভাল চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছে মেডিক্যাল কলেজ। দুই-একটি ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠছে, সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ দিন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান জেলাশাসক কৌশিক সাহা। তিনি বলেন, “ঘটনার তদন্ত করা হবে। বাকি কোনও অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।” কোচবিহার মেডিক্যাল হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ অবশ্য বলেন, “রোগীদের সব ক্ষেত্রেই ভাল পরিষেবা দেয় মেডিক্যাল কলেজ। দুই-একটি ক্ষেত্রে অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

Advertisement

আগুন লাগার ওই ঘটনার পরে খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা কনফেডের বিশেষ অফিসার পার্থপ্রতিম রায়। তিনি জানান, ওই বিষয়ে তিনি স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছেন।

কোচবিহার জেলা হাসপাতালের বিল্ডিংয়েই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চালু করা হয়। তার আগেই হাসপাতালের পরিকাঠামো অনেকটাই বাড়ানো হয়। একাধিক পরিষেবা যেমন চালু করা হয়, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চিকিৎসক, নার্স থেকে কর্মী সংখ্যাও বাড়ানো হয়। মেডিক্যাল হাসপাতাল হওয়ার ফলে অন্তর্বিভাগে শয্যার সংখ্যাও বাড়ানো হয়। সেই সঙ্গে চালু করা হয় মাদার অ্যান্ড ও চাইল্ড হাব। ওই বিভাগেই ৩০০ শয্যার ব্যবস্থা রয়েছে। গত মাস দেড়েক থেকেই একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে মেডিক্যালের বিরুদ্ধে।

একটি সামাজিক সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়, চিকিৎসার গাফিলতিতে একাধিক সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয় হাসপাতালে। অভিযোগ, পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া ঘোকসাডাঙার বাসিন্দা নন্দিতা ভৌমিক নামে এক শিশুও মারা যায় চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য। দিন কয়েক আগে দিনহাটার বুড়িরহাটের পাঁচ বছরের শিশু রাজা বর্মণের মৃত্যু নিয়েও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে হাসপাতালে হামলা ও চিকিৎসকদের মারধরের অভিযোগে পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করে। সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রাজা বৈদ্য বলেন, “হাসপাতাল ও চিকিৎসকের উপরে হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সেই সঙ্গেই কোচবিহার হাসপাতাল সাধারণ মানুষের ভরসার জায়গা। সেই সুনাম যাতে নষ্ট না হয় তাও দেখা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement