ছবি: সংগৃহীত।
বালুরঘাট থেকে সরে যাচ্ছে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার (এফসিআই) জেলা দফতর। কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্তে শোরগোল পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে কৃষক থেকে চালকল মালিকদের তরফ থেকে। পাশাপাশি, এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হয়ে যাওয়ায় জেলায় মিড-ডে মিল থেকে গণবণ্টন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
এফসিআই সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ওই নির্দেশ আসে। এই খবর দিয়ে এফসিআইয়ের শিলিগুড়ি আঞ্চলিক দফতরের বিভাগীয় ম্যানেজার সপ্তর্ষি মণ্ডল জানান কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে বালুরঘাট থেকে জেলা দফতর মালদহে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার বালুরঘাটের দফতর থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও ভিজিল্যান্স সংক্রান্ত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও মালদহ অফিসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন কৃষক থেকে সংশ্লিষ্ট মহল। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সাংসদের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তবে এ দিন সুকান্ত প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে কিছুটা দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, আগের লোকসভায় বালুরঘাট থেকে এফসিআইয়ের জেলা দফতরটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেইসময় বালুরঘাটের তৃণমূলের সাংসদ (অর্পিতা ঘোষ) আটকানোর চেষ্টা করেননি বলে তিনি জানান। তবে দফতরটি বালুরঘাট থেকে যাতে উঠে না যায়, তার চেষ্টা করবেন বলে সুকান্ত আশ্বাস দেন।
তৃণমূল জেলা সভানেত্রী তথা বালুরঘাটের প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা বলেন, ‘‘গত সংসদে বিরোধী আসনে থেকে ওই দফতরটি স্থানান্তরের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাই। সেইজন্যেই এতদিন ওই প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। এবারে তো বালুরঘাটে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিরই সাংসদ হয়েছেন (সুকান্ত)। তিনি তো এ বিষয়ে সদর্থক ভূমিকা নিতে পারেন।’’ তবে এই স্থানান্তর আটকাতে আন্দোলন হবে বলে অর্পিতা জানান।
জেলার চালকল মালিক সমিতির প্রতিনিধি অশোক জোয়ারদারের দাবি, এফসিআই সংক্রান্ত নানা কাজে বালুরঘাট থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরে মালদহে যেতে চরম ভোগান্তি হয়। পরিষেবা পেতে সমস্যায় পড়বেন জেলার চাষি থেকে সংশিষ্ট দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, ‘‘শুক্রবার দফতরটি স্থানান্তরের খবর পেয়েছি। সমস্যার কথা রাজ্য স্তরে জানানো হচ্ছে।’’