নিজস্ব চিত্র
বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দিদি। আর তাঁকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে ভাই! বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির মল্লিকশোভা এলাকায় এমন দৃশ্যে চাঞ্চল্য ছড়াল। বছর আঠারোর তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল তাঁর বাবার বিরুদ্ধে। মেয়েকে খুন করার পর প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও কিছু ক্ষণের মধ্যেই অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মল্লিকশোভার বাসিন্দা নিরঞ্জন পালের বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। স্ত্রী এবং মেয়ে ললিতাকে প্রায়ই মারধর করতেন নিরঞ্জন। বৃহস্পতিবার সকালে অশান্তি চরমে ওঠে। এর পর বিকেল নাগাদ ওই বাড়ি থেকে গলাফাটা কান্নার শব্দ শুনতে পেয়েই প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন, বিছানায় দিদি ললিতাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে ভাই সুব্রত পাল। তৎক্ষণাৎ স্থানীয়েরা ললিতাকে নিয়ে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
বাবার বিরুদ্ধে দিদিকে খুন করার অভিযোগ তুলেছেন সুব্রত। সে বলে, ‘‘বাড়িতে মাঝে মধ্যেই ঝগড়া লাগে। মাকে বিনা কারণে মারধর করে বাবা। আমি বাজারে গিয়েছিলাম। ঘরে ঢুকে দেখি, আধমরা হয়ে পড়ে রয়েছে দিদি। বাবা-ই দিদিকে মেরে পালিয়ে গেছে। কী দিয়ে মেরেছে জানি না!’’
পাশেই থাকেন ললিতা-সুব্রতের কাকিমা শিল্পী পাল। সুব্রতের কান্না শুনেই ওঁদের ঘরে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। শিল্পীর কথায়, ‘‘ঘরে ঢুকে দেখি, বিছানার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ললিতা। আর ওঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে বসে রয়েছে সুব্রত। সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রতিবেশীদের ডাক দিই।’’ সকাল থেকে নিরঞ্জনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ঝগড়া হচ্ছিল বলে জানান শিল্পী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি দিনই ঝগড়া হয়। তা বলে এই ভাবে মেয়েকে মারধর করে ফেলে রেখে বাবা পালিয়ে যাবে, বুঝিনি।’’
স্থানীয়েরাই খবর দিয়েছিল ধূপগুড়ি থানায়। খবর পেয়েই মৃতার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রথমে ঘটনাস্থলে অভিযুক্ত নিরঞ্জনকে খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা। পরে ঘটনার দিন রাত ১১টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার ধৃতকে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করানো হতে পারে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।