বধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে বাধা দেন শ্বশুর। প্রতীকী ছবি।
বউমাকে রক্ষা করতে গিয়ে আক্রান্ত শ্বশুরের মৃত্যু হল হাসপাতালে। অভিযোগের আঙুল শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার দশদড়গা এলাকায়।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ এপ্রিল। সে দিন বাড়িতে রান্না করছিলেন জলপাইগুড়ি দশদরগা এলাকার বাসিন্দা আজিনা বেগম। আচমকাই তাঁর বাড়িতে ধারালো অস্ত্র আর লোহার রড হাতে নিয়ে ঢুকে পড়ার অভিযোগ জনৈক ওয়াদুল হকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কতী। ওই দিন ঘরে ঢুকে আজিনাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে ছুরি দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। ধ্বস্তাধস্তিতে গৃহবধূর পোশাক ছিড়ে যায়। সে সময় বাড়িতেই ছিলেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ শ্বশুর সিদ্দিক মহম্মদ। বউমাকে রক্ষা করতে ছুটে যান তিনি। তাঁকে লোহার রড দিয়ে ওয়াদুল মারেন বলে অভিযোগ। মারের চোটে বৃদ্ধ মাটিতে পড়ে গেলে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। অভিযোগ, যাবার সময় তাঁদের সবাইকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে যান তিনি।
মারাত্মক জখম অবস্থায় বৃদ্ধ সিদ্দিককে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। ঘটনার বিবরণ জানিয়ে ১৪ এপ্রিলই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আজিনা। কিন্তু তার পরও অভিযুক্ত গ্রেফতার হননি। অন্য দিকে, বৃদ্ধের শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। গত ২০ এপ্রিল তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। শুক্রবার ভোরে বাড়িতেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধের।
এই ঘটনায় মৃতের ছেলে মোতিয়ার রহমান ফের জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, ওয়াদুল হক সেদিন তাঁর বাবাকে লোহার রড দিয়ে মেরেছিলেন। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই অভিযোগ দায়েরের পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, আগে একটি মারপিটের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তার তদন্ত শুরু হয়েছিল। শুক্রবার ফের অন্য একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও মৃতের পরিবারের তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে।