তীব্র দাবদাহে দক্ষিণ দিনাজপুরে আমন ধানের জমি শুকচ্ছে। ছবি অমিত মোহান্ত
আকাশে মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির দেখা নেই। তীব্র গরমে আমন ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। তার উপর জেলা জুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছেই। ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষক সুমন সূত্রধর জানান, গত কয়েক দিন ধরে জেলায় তাপমাত্রা প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঘোরাফেরা করছে। গরমের অনুভূতি হচ্ছে প্রায় ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত।
জেলার প্রধান খাদ্যশস্য আমন ধান চাষে জলের অভাবে জমি শুকোতে বসেছে। চাষিরা সেচ সংকটের আশঙ্কায় ভুগছেন বলে খবর। কৃষি দফতর জানিয়েছে, জেলায় মূলত আমন ধানের উৎপাদনে সাফল্যের পিছনে থাকে অনুকূল আবহাওয়া। এবারে আবহাওয়া সব হিসেব পাল্টে দিচ্ছে বলে আশঙ্কায় চাষিরা। দক্ষিণ দিনাজপুরে মোট কৃষি জমির পরিমাণ ১ লক্ষ ৭৫ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার হেক্টরে আমন ধানের চাষ হয়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধান বুনে ফাঁপরে পড়েছেন কৃষকেরা।
জেলার আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা। তাদের মতে, বালুরঘাটে সবুজায়নের ব্যাপক ঘাটতি-জনিত কারণে ফি বছর দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির সঙ্গে গরমে টক্কর দিচ্ছে এই জেলা। বন দফতর সূত্রের খবর, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূখন্ডের ৩৩ শতাংশ এলাকায় বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুরে বনভূমির পরিমাণ মাত্র ৯ শতাংশ। তার উপর কাঠচোরেদের দাপটে রাতে অন্ধকারে বনভূমি বেমালুম সাফ হয়ে যাচ্ছে। যার দরুণ মেঘ আকর্ষণের ক্ষমতা ক্রমশ হারিয়ে ফেলেছে এই জেলা। ফলে গরম ক্রমশ বেড়েই চলেছে।
তিন দিক বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঘেরা বালুরঘাটের আকাশে মেঘের আনাগোনাই সার। কিছুক্ষনের মধ্যে কালো মেঘ উড়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যেতেই প্রখর রোদের তাপ জাঁকিয়ে বসছে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি হওয়ায় জবজবে অসহ্য ঘামে অস্থির বাসিন্দারা। গরমের জেরে জেলায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনে অসুস্থ হয়ে বেশ কিছু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডি-হাইড্রেশন ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোজ রোগী ভর্তি হচ্ছেন সেখানে।