প্রতীকী ছবি।
একশো দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ। মিলছে না বকেয়া টাকা। এই পরিস্থিতিতে ধানেরও দাম নেই। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ায় ধান কেনা বন্ধ করেছে সরকার। আর এই দুইয়ের জেরে পুজোর মুখে বিপাকে পড়েছেন কোচবিহারের কৃষক, সাধারণ মানুষ।
রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী রথীন ঘোষ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ কোচবিহারে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সে কারণে সেখানে ধান কেনা বন্ধ রয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব।’’ তিনি জানিয়েছেন, নভেম্বর মাস থেকে ফের নতুন করে ধান কেনা শুরু হবে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় দু’লক্ষ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। যা থেকে উৎপাদন হয় ন’লক্ষ ৬৮ হাজার টন ধান। এ ছাড়া, জেলায় ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়। কয়েক লক্ষ কৃষক চাষের সঙ্গে যুক্ত। কৃষকদের একটি অংশ একশো দিনের কাজেও যুক্ত। নিজেদের স্বল্প জমিতে তাঁরা ধান চাষ করেন, সে সঙ্গেই একশো দিনের কাজও করেন।
এ দিন সকালে ঘুঘুমারি বাজারে ধান নিয়ে গিয়েছিলেন বিজয় রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার তিন বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে ধান চাষ করে, সে সঙ্গে গ্রামে একশো দিনের কাজ থেকেও কিছু আয় করি। ওই কাজ এখন বন্ধ। সরকার না কেনায়, ধানের দামও কম। সংসার চালানো নিয়ে চিন্তায় পড়েছি।’’ খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার কোচবিহারে এক লক্ষ ৫৮ হাজার টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল। গত নভেম্বরের শুরুতে ধান কেনা শুরু করেছিল সরকার। কোচবিহারে অগস্ট মাসের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যায়। সে কারণে ধান কেনা বন্ধ করা হয়।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, সরকার ধান কেনা শুরু করলে বাজারেও ভাল দাম (সরকারি দাম প্রতি কুইন্ট্যাল ১,৯৪০ টাকা) পাওয়া যায়। সরকারি শিবির বন্ধ হতেই ছবি পাল্টে গিয়েছে। প্রথমে দেড় হাজার, পরে কুইন্ট্যাল প্ৰতি ১,২০০-১,৩০০ টাকায় ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। কৃষকদের দাবি, সরকারের ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক দাওয়া শেরপা বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছি। নভেম্বর মাস থেকে আবার ধান কেনা শুরু হবে।’’