চিন্তিত ধান চাষী। — ফাইল চিত্র।
কৃষি দফতরের কাছে থাকা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর আলিপুরদুয়ার জেলায় এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টি খানিকটা বেশিই হয়েছে। কিন্তু কৃষিকাজের জন্য যে সময়ে তা দরকার, সেই জুলাই মাস থেকে শুরু করে চলতি অগস্ট মাস পর্যন্ত সে অর্থে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। উল্টে জেলা জুড়ে চলছে তীব্র গরম। মাঝেমধ্যেই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। এই অবস্থায় বৃষ্টি ও জলের অভাবে জেলায় অনেক জায়গাতেই ধানগাছে পাশকাঠি ছাড়তে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। ফলে, আমন ধানে ক্ষতির আশঙ্কাও করছেন তাঁরা।
আলিপুরদুয়ারের কৃষি দফতরের আধিকারিকদের কথায়, প্রাক্-বর্ষায়, অর্থাৎ, ১ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত জেলার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকে ৫২৮ মিলিমিটার। অথচ, চলতি বছরে ওই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে ৭৬৫ মিলিমিটার। বর্ষার মরসুমে ১ জুন থেকে চলতি মাসের এই সময় পর্যন্ত জেলার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ থাকে ২,১১০ মিলিমিটার। তা-ও ছাপিয়ে গিয়ে চলতি বছরে এই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে ২,১৪৯ মিলিমিটার। তার পরেও কেন আমন চাষে সমস্যা হচ্ছে?
কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বর্ষায় জেলায় যে ২,১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, তার বেশির ভাগটাই হয়ে গিয়েছে জুন মাসে। জুলাই মাস থেকে বৃষ্টির আকাল শুরু হয়েছে গোটা জেলায়। অথচ, জুলাই মাসের শুরু থেকে অগস্টের ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমন ধানের চাষ শুরুর মূল সময়। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর জেলায় এক লক্ষ তিন হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বৃষ্টির অভাবে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ শুরু করা যায়নি। তবে কৃষি দফতরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় ৬৭ হাজার কী হেক্টর জমিতে জলসেচের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তার বাইরে, যে সব জমিতে চাষ হচ্ছে, সেখানে বহু কৃষক সমস্যায় পড়েছেন। আলিপুরদুয়ার জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) হরিশ রায় অবশ্য বলেন, “বৃষ্টি হলে ও যথাযথ পরিচর্যা হলে, ফলন এখনও স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”