—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এক দিকে, জমি জুড়ে রয়েছে পাট। অন্য দিকে, এ বছরে জমিতে আমন ধানের ‘বীজতলা’ রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বৃষ্টির অভাবে পাট ও ধান চাষ করতে গিয়ে চাষিদের সমস্যা চরমে। চাষের খরচও বাড়ছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনা উত্তর দিনাজপুরে। জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা সফিকুল আলম বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে জেলায় বৃষ্টি হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এ বছর জেলায় প্রাক্-বর্ষার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। দ্রুত, বৃষ্টি না হলে জেলার পাট ও ধান চাষিদের সমস্যা বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।’’
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে পাট এবং ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। জেলার কয়েক লক্ষ চাষি এই দুই ফসলের চাষ করেন। চাষিদের দাবি, কয়েক মাস ধরে জেলায় ভারী ও একটানা বৃষ্টি হয়নি। সেই সঙ্গে, রোদের প্রখর তাপ চলছে। এ সব কারণে জমির মাটি শুকিয়ে গিয়ে ভূগর্বস্থের জলস্তর অনেকটা নেমে গিয়েছে। জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ জমি সরকারি জলসেচের আওতায় নেই। ফলে, চাষিরা কেউ পাম্প মেশিন ভাড়া করে জমিতে জলসেচ দেন, কেউ আবার তাঁদের নিজস্ব গভীর নলকূপ বা পাম্প মেশিন থেকে জল তুলে জমিতে জল দেন। রায়গঞ্জ ব্লকের রায়পুর এলাকার ধানচাষি মনোরঞ্জন বর্মণ তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের ‘বীজতলা’ রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় পাম্প মেশিন দিয়ে জল উঠছে না। দ্রুত পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ধান চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’’ হেমতাবাদ ব্লকের বাঙালবাড়ির পাট চাষি সলমন মহম্মদ এ বছর দশ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে প্রায় ন’হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই পাট ওঠার কথা। বৃষ্টির অভাবে এখন প্রতিদিন ঘণ্টায় তিনশো টাকা খরচে প্রতিবিঘা জমিতে পাম্প মেশিন ভাড়া করে পাটের জমিতে জলসেচ দিতে হচ্ছে। ফলে, দ্রুত বৃষ্টি না হলে এ বারে পাট চাষে লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছি।’’