কোথাও আলু রাস্তায় ফেলা হল। কোথাও চলল অবরোধ। আলুর বন্ড না মেলার অভিযোগে সোমবার দিনভর চাষিরা বিক্ষোভ দেখালেন কোচবিহার, জলপাইগুড়ির নানা জায়গায়। আলুর সঠিক দাম না পাওয়ারও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
সোমবার সকাল থেকে কোচবিহার শ্যুটিং ক্যাম্পের কাছে আলুর বন্ড না পাওয়ার অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় চাষিরা। তার জেরে কোচবিহার-সোনাপুর রাস্তায় যানজট হয়। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। পরে পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে। এ দিনই দিনহাটা কৃষিমেলা বাজারের কাছে রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের প্রাদেশিক কৃষক সভা। বিকেলে ৮টি ব্লকেও বিক্ষোভ দেখান হয়। একই দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ হয়েছে ধূপগুড়িতেও।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, হিমঘরে আলু রাখার জন্য বন্ড পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদার তুলনায় তা অত্যন্ত কম বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা। ২৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন কোচবিহারের পাতলাখাওয়ার নবারউদ্দিন মিঁয়া। অনেক চেষ্টাতেও বন্ড না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন তিনি। একই সমস্যার কথা জানালেন আরও এক চাষি সামিম হকও।
কোচবিহারে ১২টি হিমঘর রয়েছে। তাতে দেড় লক্ষ মেট্রিক আলু মজুত রাখা যায়। এই মরসুমে উপযোগী আবহাওয়া হওয়াতে জেলায় আলু উৎপাদন ৭ লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এই সমস্যার কথা জানা সত্ত্বেও কৃষি দফতর কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ চাষিদের।
অন্যদিকে কৃষি বিপণন দফতর বিভিন্ন সময় নিয়ম পাল্টাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ধূপগুড়ির চাষিরা। তাঁদের দাবি, কোনওদিন নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে কৃষক প্রতি ২০০ প্যাকেটের বন্ড দেওয়া হবে আবার কখনও নিয়ম বদলে তা ১০০ বা ৫০ প্যাকেট করা হচ্ছে। বন্ড না পাওয়ারও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। খোলাইগ্রামের গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘বন্ড পাচ্ছি না। পাইকাররা আলু কিনছে না। আলু বিক্রি না হলে ঋণের জ্বালায় মরা ছাড়া অন্য রাস্তা নেই।’’ একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ধূপগুড়ির কলেজপাড়ার হরিপদ পালও।
ব্যবসায়ীরা আলু কিনে হিমঘরে রাখার বন্ড পাবে কি না তার কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশ নেই বলে জানালেন উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক দাস। এর জেরেই ব্যবসায়ীরা আলু কেনা শুরু করেনি বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মঙ্গলবার আলোচনায় বসে কৃষি বিপণন মন্ত্রীকে স্মারকলিপি পাঠিয়ে বন্ড দেওয়ার কথা বলব।’’ বন্ড না পেলে ব্যবসায়ীদের পক্ষে আলু কেনা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়েছেন কার্তিক দাস।