broker cycle

ধানের ঘরেই দালালচক্র

অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন মান্ডিতে ধান কেনা-বেচায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:২২
Share:

কেনাবেচা: কিসান মান্ডিতে চলছে ধান সংগ্রহের কাজ। বৃহস্পতিবার দিনহাটায়। নিজস্ব চিত্র

অপেক্ষাকৃত ছোট কৃষকেরাই তুরুপের তাস। যাঁদের একাংশের উপর ভর করে কিসান মান্ডিতে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ উঠল আলিপুরদুয়ারে। আরও অভিযোগ, কিসান মান্ডিগুলিতে পুলিশের নজরদারির কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই অনিয়ম বুঝতে পেরেও কিছু করতে পারছেন না খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

সূত্রের খবর, এবছর জেলায় প্রায় ৯৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদন প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারি ভাবে এক লক্ষ ত্রিশ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলার পাঁচটি কিসান মান্ডির পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়েও কৃষকদের থেকে ধান কেনা হচ্ছে। কুইন্টাল পিছু কৃষকদের দাম দেওয়া হচ্ছে ১৮১৫ টাকা। তবে মান্ডিতে বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু অতিরিক্ত ২০ টাকা উৎসাহ ভাতা মেলায় কৃষকদের অনেকেই সেখানে ভিড় করছেন।

কিন্তু অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন মান্ডিতে ধান কেনা-বেচায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালেরা। ধান কেনার কাজে তদারকির জন্য বিভিন্ন মান্ডিতে খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিক ও কর্মীরা রয়েছেন। তাঁদের একাংশের কথায়, সরকারি নিয়মে কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের জমির খতিয়ানের কাগজ, ভোটার কার্ড ও ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বরের মতো কিছু তথ্য দেখা হয়। অভিযোগ, ধান বিক্রি শুরু হতেই একাধিক জায়গায় দালালদের একাংশ শুধু ভোটার কার্ড ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দিয়েই ধান কেনার দাবি করছে। সরকারি আধিকারিকরা তা না মানায় কোথাও কোথাও তাঁদের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

সরকারি ওই আধিকারিক ও কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এরপর অপেক্ষাকৃত ছোট কৃষকদের পাকড়াও করে নিজেদের কাজ শুরু করছে দালালেরা। অভিযোগ, নির্দিষ্ট পরিমাণ জমির কাগজ দেখাতে পারলে একজন কৃষক সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু অনেক কৃষক এমনও রয়েছেন, যাঁরা দশ-পনেরো কুইন্টাল ধানও বিক্রি করছেন। যেসব কৃষকদের বিক্রির তাড়া রয়েছে বা অনেক বেশি পরিমাণ ধান বিক্রি করবেন, তাঁদের কাছ থেকে ধান নিয়ে তা মান্ডিতে ছোট কৃষকদের একাংশের মাধ্যমে সরকারি দরে বিক্রি করে দিচ্ছে দালালেরা। এবং সেই বিক্রি থেকে পাওয়া আয়ের একাংশ নিজেদের কাছে রেখে দিচ্ছে।

সরকারি আধিকারিক ও কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, গতবারও সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ের সময় দিনের বেলায় মান্ডিতে পুলিশের নজরদারি ছিল। এবার শুধু রাতে সিভিক ভলান্টিয়াররা মান্ডির পাহারায় থাকেন। ফলে দিনের বেলায় দৌরাত্ম্য চালায় দালালেরা। আলিপুরদুয়ারের জেলা খাদ্য নিয়ামক প্রেসিকা মোকতান বলেন, ‘‘ধান ক্রয়ের সময় কিসান মান্ডিতে পুলিশ যাতে থাকে, সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ করছি। যেসব অভিযোগ উঠছে, সেগুলিও খতিয়ে দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement