স্তব্ধ: মৃত সন্তোষ রায়।
দরিদ্র পরিবার। সেই পরিবেশে থেকেও ছাত্র হিসেবে বেশ ভালই ছিল কিশোর সন্তোষ রায়। রবিবার জোড়পাকড়ি এলাকায় টিউশনি পড়তে এসেছিল সে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না তার।
সন্তোষের বাড়ি ময়নাগুড়ি ব্লকের ভোটপট্টি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর পদমতির ধন্নির গ্রামে। জোড়পাকড়ি আব্দুল গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ দিন পুলিশের আধিকারিকেরা তার বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়ে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
জোড়পাকড়ি বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক আব্দুল রহমানের বাড়িতে প্রতিদিনের মতো এ দিনও সাইকেল নিয়ে টিউশন নিতে এসেছিল সন্তোষ। সেইসময় অন্য কয়েকজন ছাত্রকে পড়াচ্ছিলেন। তাই সাইকেল রেখে রাস্তার পাশে সন্তোষ দাঁড়িয়েছিল। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল বলে আফশোস ওই শিক্ষকের। ওই গ্রামের আরও এক ছাত্র সুদীপ রায় জখম হয়। ঘটনায় পরেই মৃত ছাত্রের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। সন্তোষের বাবা কমল রায় চাষবাস করে সংসার চালান। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার।
কমল জানালেন, ছেলেকে নিয়ে তাঁর স্বপ্ন ছিল, বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে। সব স্বপ্ন ভেঙে গেল। এ দিন জখম ছেলেকে নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে তিনিও জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন ছেলের কিছু হবে না। কিন্তু হাসপাতালে দাঁড়িয়ে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। গ্রামবাসীরা তাঁকে কিছুটা সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে যান। মৃত ছাত্রের দাদু নারায়ণ রায় বলেন, ‘‘আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেল।’’
স্থানীয় পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছে। খুবই খারাপ ঘটনা। মৃত ছাত্রের পরিবার গরিব। পরিবারের ক্ষতি কোনও কিছু দিয়ে পূরণ করা যাবে না। আর্থিক সাহায্য পেলে কিছুটা হয়তো উপকার হবে পরিবারটির। কীভাবে তা করা যায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে"৷