ফাইল চিত্র।
এ বার কুসংস্কারের কথা শোনা গেল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের পরিবারে। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রায়গঞ্জের রুনিয়া এলাকায়।
এ দিন ভোরে হেমতাবাদের তৃণমূল বিধায়ক তথা সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সত্যজিতের মামিমা বছর একান্নর শকুন্তলা বর্মণের পায়ে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। শকুন্তলা রায়গঞ্জের জগদীশপুর কদমতলা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা। পরিবারের লোকেরা এর পরে, তাঁকে স্থানীয় এক ওঝার বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ শকুন্তলাকে ঝাড়ফুঁক করেন ওই ওঝা। ঝাড়ফুঁক চলাকালীন তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। সে খবর পৌঁছয় সত্যজিতের কাছে। সত্যজিৎ শকুন্তলাকে নিজের গাড়িতে করে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তত ক্ষণে সাত ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। বর্তমানে মেডিক্যালের সিসিইউ ইউনিটে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
মেডিক্যালের চিকিৎসক বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সাপের ছোবলে অসুস্থ রোগীদের যতটা দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি। নয়তো, প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন ও চিকিৎসার অভাবে শরীরে বিষ ছড়িয়ে রোগীদের বিপদ বাড়তে পারে।”
সত্যজিতের দাবি, তাঁর মামিমাকে সাপে ছোবল দেওয়ার পরে, তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তাঁর জানা ছিল না। মন্ত্রী বলেন, “আমি ঘটনার কথা জানার পরেই মামির চিকিৎসার জন্য তাঁকে মেডিক্যালে পাঠাই।” সত্যজিতের দাবি, তিনি পরিবারের লোকজন ও এলাকার বাসিন্দাদের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতন করেছেন। জেলা জুড়ে ওঝাদের প্রভাব রুখতে করণীয় ঠিক করতে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন।
এ দিন ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ঘর ঝাঁট দেওয়ার সময়ে বাড়ির পাশে আগাছার মধ্যে শকুন্তলার ডান পায়ে একটি বিষাক্ত সাপ ছোবল দেয়। শকুন্তলার স্বামী বনলাল বর্মণ বলেন, “ওই ঘটনার পরে, আমরা শকুন্তলাকে মোটরবাইকে চাপিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ওঝার বাড়িতে নিয়ে যাই। সেখানে ওঝা দীর্ঘ ক্ষণ ঝাড়ফুঁক করেও স্ত্রীকে সুস্থ করতে পারেননি। তত ক্ষণে স্ত্রী অচেতন হয়ে পড়ে। এর পরে, সত্যজিতের সহযোগিতায় বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ স্ত্রীকে মেডিক্যালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি। কুসংস্কারবশত স্ত্রীকে ওঝার কাছে না নিয়ে গিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি করলে, ওর শারীরিক অবস্থা এতটা খারাপ হত না।”