শিলিগুড়িতে উদ্ধার হওয়া নকল ধূপকাঠি। —নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মরসুম শুরুর মুখে শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে জাল ধূপকাঠির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অভিযোগ, শিলিগুড়ি থেকে উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে মহীশূর, বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন প্রসিদ্ধ সংস্থার মোড়কে জাল ধূপকাঠি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের পুণের এক সংস্থা থেকে অভিযোগ আসে শিলিগুড়ি পুলিশের কাছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর হাসমিচক লাগোয়া নিবেদিতা মার্কেটের ধূপকাঠির বাজারে শিলিগুড়ি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারেরা অভিযান চালান। উদ্ধার হয় প্রচুর নকল ধূপকাঠি, মোড়ক এবং প্যাকেট।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দোকানে উদ্ধার হয় বিপুল সংখ্যক নকল ধূপকাঠি। এর আগেও ২০১৮ সালে এই একই দোকান থেকে শিলিগুড়ি পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয়েছিল বিভিন্ন সংস্থার নকল ধূপকাঠি। তার পরেই মামলা চললেও ফের নকল ধূপকাঠি বিক্রি চলছিল বলে অভিযোগ। দোকানের মালিকের খোঁজ পুলিশ শুরু করেছে। একজনকে ধরা হলেও পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছাড়া হয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুজোর
মরসুমে ধূপকাঠির বিক্রি সাধারণ বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বেশি হয়। অনেকটাই বিক্রি বেড়ে যায়। সেই সুযোগে কিছু অসাধু চক্র এই নকল ধূপকাঠির ব্যবসা করছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির মহাবীরস্থান উড়ালপুলের নীচেই নিবেদিতা মার্কেটের একাংশ। উড়ালপুলের দেওয়ালের দিকেই ধূপকাঠির পর পর দোকান। শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলা্কা, দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম ছাড়াও জলপাইগুড়ি, কোচবিহার বা রায়গঞ্জের কিছু এলাকার পাইকারি হারে শিলিগুড়ি থেকে ধূপকাঠি যায়। ইনদওর, মহীশূর, বেঙ্গালুরু ছাড়াও গুজরাতে বড় মাপের আগরবাতি বা ধূপকাঠির কারাখানা গড়ে উঠেছে। ইনদওরের একটি সংস্থার প্রতিনিধি আশরাফুদ্দিন ফইজউদ্দিন ইনাদার শিলিগুড়ি পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সংস্থার উত্তরবঙ্গ তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের দায়িত্ব থাকা আঞ্চলিক অফিসার বিল্টু চৌধুরী বলেন, ‘‘সংস্থার তরফে আমরা আইনি লড়াই করছি। পরপর দু’দফায় একই জায়গা থেকে জাল ধূপকাঠি উদ্ধার হয়। বড় একটি চক্র এ কাজ করছে। নকল ধূপকাঠির জন্য সংস্থার সুনামও নষ্ট হচ্ছে।’’
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, বিহারের পটনা এবং রাজ্যের আসানসোলে এই নকল ধূপকাঠি তৈরি চক্র চলছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আসানসোলে একটি গুদাম ও প্রেসে হানা দিয়ে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সেখানেও প্রচুর জাল ধূপকাঠির প্যাকেট উদ্ধার হয়েছে। পটনাতে বসেও আর একটি চক্র এই নকল প্যাকেট ছাপিয়ে স্থানীয় স্তরের নিম্নমানের ধূপকাঠির বাক্স তৈরি করছে। সুগন্ধী ছড়িয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিভিন্ন ধরনের মালপত্রের সঙ্গে বাসে এবং ট্রেনে তা পাচার চলছে। শিলিগুড়িতেও তা এ ভাবে এনে উত্তরবঙ্গ, সিকিম ছড়ানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ।