প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো ভিডিয়ো কল-এ রাজ্যের শাসকদলের অনেক নেতার ছবি তুলে নিয়ে তা অশ্লীল সিনেমায় ব্যবহার করে বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোচবিহারের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ইতিমধ্যে অভিযোগ করেছেন, তাঁর ছবি ব্যবহার করে পর্ন ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গোটা রাজ্যে অন্ততপক্ষে ১০০ জন প্রভাবশালীর এমনই ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের অনেকেই রাজ্যের শাসকদলের নেতা। তাঁদের মধ্যে কোচবিহারের আরও এক জন বিধায়ক রয়েছেন। কোচবিহার ছাড়াও ওই চক্রের ফাঁদে পড়েছেন উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তি।
কোচবিহার পুলিশ জানিয়েছে, উদয়নের ভিডিয়ো পরীক্ষার জন্যে ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হবে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাল্টু হালদার বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ভিন্ রাজ্য থেকে ওই ভিডিয়ো কল করা হচ্ছে। বেশ কিছু তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা যাবে না।”
কয়েক দিন আগেই কোচবিহার পুলিশ অচেনা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল ধরার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছিলেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিডিয়ো কল থেকে ছবি তুলে নিয়ে তা পর্ন ছবিতে ব্যবহার করার একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। ওই ভিডিয়ো দিয়ে অনেককে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা চলছে। তার দিন দুয়েকের মধ্যেই উদয়ন সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, তিনি এমন একটি চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। তাঁকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা হচ্ছে। কোচবিহারের আরও এক বিধায়ক পুলিশের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, হরিয়ানা ও পঞ্জাব থেকে এমন ভিডিয়ো কল করা হচ্ছে। ছক কষে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগাম প্রস্তুত হয়ে ওই কল করা হচ্ছে। একবারে রিসিভ না হলে দু-তিন বার ফোন করা হচ্ছে। রিসিভ করার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক সেকেন্ডের ভিডিয়ো রেকর্ড করা হচ্ছে। এর পরে তা একটি পর্ন ভিডিয়োর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে সেই ছবি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে।
পুলিশের সন্দেহ, এর পিছনে একটি বড় চক্র রয়েছে। যারা খুঁজে খুঁজে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ‘টার্গেট’ করছে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার জন্য। খোঁজখবর নিয়েই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ভিডিয়ো কল করা হচ্ছে। তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আসলে অনেকেই সম্মানের ভয় পান। তাই কোনও বিতর্কে না গিয়ে অভিযুক্তদের দাবি মিটিয়ে দিচ্ছেন। এতেই তারা আরও বেশি করে সাহস পেয়ে যাচ্ছে।”