ফাইল চিত্র।
লাগাতার পুলিশি অভিযান ও কড়া নজরদারি সত্ত্বেও বাজি পোড়ানো ঠেকানো গেল না। গৌড়বঙ্গের সব জেলাতেই শনিবার সন্ধ্যার পর কম-বেশি বাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে রোগী এলে তাঁকে দ্রুত উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত তিন জেলার স্বাস্থ্য দফতর। কোভিড হাসপাতালে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফাঁকা বেড।
মালদহ
মকদুমপুরের বছর সত্তরের রাজেশ দাস গত বছরের কালীপুজোর রাত এখনও ভুলতে পারছেন না। কালীপুজোর সেই রাতে বাজির ধোঁয়ায় ঘরেই প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। পরিবারের লোকেরা তাঁকে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করতে বাধ্য হয়। সেই রাত হাসপাতালে কাটিয়ে পরের দিন দুপুরে বাড়ি ফেরেন তিনি। রাজেশের আশঙ্কা, এ বার বাজি পোড়ানোর জেরে একই পরিস্থিতি হবে না তো? এই আশঙ্কা ইংরেজবাজার শহর থেকে শুরু করে গ্রামীণ এলাকার সচেতন বাসিন্দাদেরও। সে কথা ভেবেই মালদহ মেডিক্যাল থেকে শুরু করে ব্লক সদরের হাসপাতালগুলিতে রাতের দিকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য অতিরিক্ত শয্যা রেখে দেওয়া হয়। মালদহ মেডিক্যালের কোভিড ইউনিটেও পাঁচটি আলাদা শয্যা রাখা হয়েছে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জন্য। সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগে রাতে বেশি সংখ্যক চিকিৎসক রাখার পাশাপাশি আলাদা শয্যারও ব্যবস্থা রেখেছি।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্লক হাসপাতালগুলিতেও পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডের শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে বাজির ধোঁয়ায় অসুস্থদের জন্য।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর
বালুরঘাটের কোভিড হাসপাতালে ১২০টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি সিসিইউ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কোভিড হাসপাতালে শনিবার পর্যন্ত ২৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। সিসিইউতে দু’জন রোগী আছেন। বাজির ধোঁয়ায় অসুস্থ কেউ হাসপাতালে এলে, করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের জন্য ১০টি শয্যা তৈরি রাখা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের সরাসরি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। আর সাধারণ শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ খোলা রাখা হয়েছে। এ কথা জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে।
উত্তর দিনাজপুর
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (৩) গৌতম মণ্ডল বলেন, “করোনা আক্রান্ত কারও যদি বাজির ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট প্রবল হয়, তাঁদের জন্য কোভিড হাসপাতালের আইসিইউ ও এইচডিইউ শয্যা ফাঁকা রয়েছে। করোনা আক্রান্ত সামান্য শ্বাসকষ্টের রোগীদের সাধারণ শয্যায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
অন্য দিকে, রায়গঞ্জ মেডিক্যালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪৬টি শয্যা রয়েছে। হাসপাতালের সুপার তথা সহকারী অধ্যক্ষ প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, “করোনা উপসর্গ নেই, অথচ আচমকা শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়েছে, এমন রোগীদের অক্সিজেন পরিষেবাযুক্ত হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা করা হবে।”