সংক্রমণ রুখতে পূর্ণ লকডাউন করা উচিত কিনা তা নিয়ে প্রথম প্রশ্ন তোলে আনন্দবাজার পত্রিকা
শিলিগুড়িতে করোনা থেকে বাঁচাতে কিছুদিনের জন্য শহরকে ‘লকডাউন’ রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানালেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। রবিবার সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, ১৫ দিনে শিলিগুড়িতে দ্রুত বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। ১৫ জুন দু’শোর সামান্য বেশি করোনা আক্রান্ত ছিল জেলায়। এখন তা বেড়ে ছ’শোর কাছে পৌঁছেছে। তার বেশিরভাগই শিলিগুড়ি শহরে। শুধু বাজার বন্ধ করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলেই তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, ‘‘তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন রাখছি, পাশাপাশি দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির জেলাশাসকদের কাছে লিখছি, যাতে তাঁরা শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় অন্তত ১৫ দিন কঠোর ভাবে লকডাউন কার্যকর করে সংক্রমণ ঠেকাতে উদ্যোগী হন। সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে এটাই একমাত্র পথ বলে মনে করি।’’
সাংসদের এই বার্তার পরে জেলায় শাসকদলের অন্দরেও নানা প্রশ্ন উঠেছে। শহরকে বাঁচাতে কী করণীয় তা নিয়ে আলোচনা এবং বিভিন্ন পরামর্শ পেতে রাজের নির্দেশে শনিবার উত্তরকন্যায় বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সৌরভ চক্রবর্তী, জেলাশাসকদের থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩০ জনেরও বেশি প্রতিনিধিদের ডাকা হয়েছিল। তাদের একাংশ তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর, অনেকে তৃণমূল নেতানেত্রী। সমাজসেবী হিসাবে তাঁরা বৈঠকে ছিলেন। সেখানে কেউই সম্পূর্ণ লকডাউন তো দূরের কথা এলাকা ভিত্তিক লকডাউন করার ব্যাপারেও আলোচনা করেননি। প্রশাসনের তরফেও লকডাউন না করে কনটেনমেন্ট জ়োন করার কথা জানানো হয়। তাঁর অসুস্থতার কথা জানিয়ে ওই বৈঠকে ডাকা হয়নি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে। এ দিন সাংসদের লকডাউনের আর্জির বিষয়টি শুনে পর্যটনমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবেন। নবান্নের নির্দেশ মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সুশান্ত রায় এ দিন বলেন, ‘‘পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সমস্ত তথ্য রাজ্য সরকারকে জানানো হচ্ছে।’’
শিলিগুড়ি শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা চারশো ছাড়িয়েছে। ৪৬, ২৮, ১৮ নম্বরের মতো বেশ কিছু ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছে। এ দিন সাংসদ জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় পরিষেবার বিষয়টি ছাড় দিয়ে শিলিগুড়ি শহরে কঠোর লকডাউন জরুরি। রাজ্য সরকারের তরফে কেবল বাজার বন্ধ করা হচ্ছে। তাতে অনেকের মনে ধারণা হচ্ছে বাজার থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেও অন্য জায়গায় নেই। আনলক পর্বে কাজে বেরোচ্ছেন বাসিন্দারা। উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্যের উন্নত পরিকাঠামো নেই। এ ভাবে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করেই উত্তরবঙ্গে করোনা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে সাংসদের আশঙ্কা। বাসিন্দাদের কাছে তিনি আবেদন করেন খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তাঁরা যাতে বাইরে না বার হন।