ঘটনাস্থলে সাবিনা। ফাইল চিত্র।
ইঞ্জিনে আটকে বৃদ্ধা, ছুটছে ট্রেন। শনিবার দুপুরে এমনই মর্মান্তিক ছবি দেখা গেল মালদহে। ট্রেন থামিয়ে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয় ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে তিনি বেঁচে ছিলেন কিনা সন্দেহ। কারণ, হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
রেল পুলিশের দাবি, ইঞ্জিনে দেহ নিয়েই প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ ট্রেনটি ছুটেছে। তার পরেও রেল টের না পাওয়ায় উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয়দের দাবি, ট্রেনটি সঠিক সময়ে থামানো হলে হয়তো বৃদ্ধাকে বাঁচানো যেত। যদিও ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ঝাঁপানিবালা মণ্ডল (৭০)। তিনি ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চপল্লির রেললাইন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, তিনি কানে ঠিক মতো শুনতে পেতেন না। স্থানীয়দের কথায়, এ দিন দুপুর দে়ড়টা নাগাদ রেল লাইন পার হচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা খেয়ে ইঞ্জিনে আটকে যান। এমন অবস্থায় ট্রেনটি ছুটতে শুরু থাকে। মালঞ্চপল্লি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কালিয়াচকের খালতিপুর স্টেশনে ট্রেনটিকে থামান চালক। রেল পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। চিকিৎসকেরা বৃদ্ধাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় প্রায় ৩০ মিনিট খালতিপুর স্টেশনে ট্রেনটি আটকে ছিল। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ইঞ্জিনে বৃদ্ধার দেহ আটকে যাওয়ায় উদ্ধারে সমস্যা হয়। যার জেরে ৩০ মিনিট ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
পরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, “খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। ইঞ্জিনে আটকে থাকা অবস্থায় ট্রেনটি বেশ কিছুটা পথ ছুটেছে।” মালঞ্চপল্লিতে দুর্ঘটনা ঘটলেও কেন টের পেল না রেল, উঠছে প্রশ্ন। রেল পুলিশের মালদহের আইসি প্রশান্ত রায় বলেন, “স্থানীয়েরাই ঘটনাটি জানায় আমাদের। এর পরেই স্টেশন কর্তৃপক্ষদের জানানো হয়। খালতিপুরে ট্রেনটি থামিয়ে মহিলাকে উদ্ধারের চেষ্টা হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” রেলকর্তাদের দাবি, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস অত্যন্ত বড় ট্রেন। যত্রতত্র আচমকা দাঁড়ালে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থেকে যায়। মালদহ ডিভিশনের ডিআরএম যতীন্দ্র কুমার বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”