n দৃষ্টান্ত: রবিবার শিলিগুড়িতে বিজেপি পুরপ্রার্থী প্রসেনজিৎ সাহা ও রিঙ্কু দত্ত একসঙ্গে ভোট প্রচারে। কারও মুখেই নেই মাস্ক। নিজস্ব চিত্র।
ওমিক্রন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশই বাড়ছিল। তা যে অমূলক নয় রবিবার রাজ্য সরকার ফের কড়াকড়ি ঘোষণা করতেই তা স্পষ্ট হল। গোটা রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও করোনা সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। সংক্রমণ বাড়ছে দার্জিলিং জেলাতেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষ ষে ভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তাতে কড়াকড়ি না করলে আরও বিপদ বাড়বে। যে বিধিনিষেধ আজ, সোমবার থেকে চালু হচ্ছে তা যাতে মানা হয়, প্রশাসনকে তা দেখতে হবে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
যেখানে প্রতিদিন রাজ্যে ৩০ হাজারের উপরে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে সেখানে বাজার-হাট, উৎসব-অনুষ্ঠানে বাসিন্দারা মাস্ক ছাড়া, করোনা বিধি না মেনে এখনও অবাধে ঘুরে বেড়ানোয় উদ্বেগ বেড়েছে। বিশেষ করে ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে, ১ জানুয়ারি বর্ষবরণে শিলিগুড়ির রাস্তাঘাট, শপিং মল, রেস্তরাঁয় ভিড় নিয়ে চিকিৎসকেরাও চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার উপর সামনে পুরভোট।
জনস্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘২৫ ডিসেম্বর এবং ১ জানুয়ারি নিয়ে আমাদের আশঙ্কা ছিলই। মানুষকে বারবার সচেতন করা হলেও কেউ কিছু শুনতে চাইছেন না। তাতে এর পর তো পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। চাপ আসবে স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর।’’
সংক্রমণ বাড়তেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে কোভিড চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলেছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের একাংশ জানান, চারশোর মতো শয্যা, অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাবস্থা সমস্ত আগে থেকেই রয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানান, শিলিগুড়ি শহরের রাস্তাঘাটে ৮০ শতাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। দূরত্ব বিধি মানা বা স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারের বালাই নেই। বিধি মানার বিষয়টি কার্যকর করতে পুলিশ, প্রশাসনকে কড়া মনোভাব দেখাতে হবে। না হলে পরিস্থিতি জটিল হবে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরাল রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরির বিশেষজ্ঞ শান্তনু হাজরা বলেন, ‘‘বাসিন্দারা অধিকাংশই কোনও বিধিনিষেধ মানতে চাইছে না। এই প্রবণতা বিপজ্জনক। শুধু ওমিক্রনের জন্য নয়, যে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তাতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জেরেও সংক্রমণ ঘটছে। বাসিন্দারা যে ভাবে বিষয়টি হালকা ভাবে নিয়ে মেলামেশা শুরু করেছিল তাতে সংক্রমণ বাড়ছে। মানুষই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’’
দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় শিলিগুড়ি শহরের নার্সিংহোমগুলির একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল মাত্রাতিরিক্ত বিল নেওয়ার। এ বার যাতে সেই পরিস্থিতির শিকার হতে না হন সে জন্য বিভিন্ন সংগঠন প্রশাসনের তরফে আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।