বন্ধ-চিত্র: রাস্তায় নেমে পিকআপভ্যান আটকাচ্ছেন বন্ধ সমর্থনকারীরা। বালুরঘাটে
কোথাও অবরোধ, কোথাও আবার বন্ধের সমর্থনে মিছিল করে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। কোথাও রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি তৃণমূল, বিজেপিকে। সকাল থেকেই মোড়গুলির দখল নেয় পুলিশ। গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই বন্ধ শান্তিপূর্ণ বলে দাবি পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের।
মালদহ
ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি মোড় সংলগ্ন বাঁধরোড। বৃহস্পতিবার বেলা ১টা নাগাদ লুচি-তরকারি বিক্রি করে হাসি মুখে দোকান বন্ধ করছেন এক যুবক। তিনি বলেন, “এ দিন ১৩ কেজি আটার লুচি, পরোটা বিক্রি করেছি। বন্ধে এমন বিক্রি হবে তা ভাবতেই পারিনি।” তাঁর মতোই শহরের বিভিন্ন এলাকায় চা, ফাস্টফুড, মিষ্টির দোকান খুলে কেনাবেচা করলেন কিছু ব্যবসায়ী। তবে নেতাজি পুরবাজার, চিত্তরঞ্জন পুরবাজার বন্ধ ছিল। রাস্তায় নামেনি বেসরকারি যানবাহন। মাথায় হেলমেট পরে বাস চালান উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চালকেরা। শহর এবং গ্রামে মিছিল করেন বাম-কংগ্রেস সমর্থকেরা। মালদহের মুখ্য ডাকঘর বন্ধ করে দেন তাঁরা। তৃণমূল নেতা ছোটন মৌলিক দলবল নিয়ে ডাকঘর খুলে দেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বন্ধ সফল হয়েছে।” ছোটন বলেন, “মানুষ বন্ধের পক্ষে নয়, তা এদিন স্পষ্ট হল।” সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরা অন্য দিনের মতোই স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
দক্ষিণ দিনাজপুর
বালুরঘাটের তহবাজার। আনাজ, মাছ, মাংসের পসরা সাজিয়ে বসেন একদল ব্যবসায়ী। বন্ধ সমর্থনকারী হাজির হলে দোকান গুটিয়ে নেন তাঁরা। আন্দোলনকারী ফিরতেই ফের স্বাভাবিক হয়ে যায় বাজার। চা ও মুদির দোকান খুলেও ব্যবসা করেন কিছু ব্যবসায়ী। তাঁদের দাবি, লকডাউনে দিনের পর দিন বাড়িতে বসে থেকেছি। আর ছুটি চাই না। বেসরকারি যান না চললেও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের দাবি, সরকারি অফিসগুলিতে হাজিরা স্বাভাবিক ছিল এ দিন। বন্ধের সমর্থনে বাম এবং কংগ্রেস পথে নামলেও রাস্তায় দেখা যায়নি তৃণমূলকে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “বন্ধের প্রভাব ছিল জেলার সর্বত্রই।” বিজেপির জেলা সভাপতি বিনয় বর্মণ বলেন, “কৃষি ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।”
উত্তর দিনাজপুর
এ দিন রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর, ইসলামপুর ও চোপড়া থানার বিভিন্ন এলাকায় বেশির ভাগ দোকানপাট ও বাজার বন্ধ ছিল। বেসরকারি যানবাহন চলাচল না করলেও রাস্তায় চলেছে টোটো ও রিকশা। পুলিশের নজরদারিতে রায়গঞ্জ সহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকাল ও দূরপাল্লার রুটের সরকারি বাস চলাচল করেছে। শিলিগুড়ি মোড়, কালিয়াগঞ্জের বিবেকানন্দ মোড়, পাঞ্জিপাড়া, ইসলামপুর ও চোপড়ার পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। প্রশাসনের দাবি, এ দিন জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মীদের ১০০ শতাংশ হাজিরা ছিল। জোর করে বন্ধ করার চেষ্টার অভিযোগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্ধ সমর্থনকারী ২০ জনকে গ্রেফতার করে পরে তাঁদের ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেয় পুলিশ।
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, অনুপরতন মোহান্ত, গৌর আচার্য