উত্তরবঙ্গের চা বাগান। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রমিকদের একাধিক সুখবর শুনিয়েছেন। পাট্টা থেকে পর্যটনের হাত ধরে চা বাগানের কর্মসংস্থান, ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পে শ্রমিকদের আবাসন এবং শ্রমিকদের জন্য বাগানে নিজস্ব ঘর তৈরি করবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার ক্রান্তির জনসভা থেকে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘোষণায় শ্রমিক মহল্লায় আশা ছড়ালেও, চা বাগানের মালিক পক্ষ কিছুটা ধন্দে। তাঁদের প্রশ্ন, বাগানে দেদার পর্যটন প্রকল্প হলে তা আখেরে চা শিল্পের ক্ষতি করবে না তো!
চা শ্রমিকদের জন্য এ বার বাড়িও তৈরি করবে রাজ্য সরকার। চা শ্রমিকদের থাকার জন্য ‘চা সুন্দরী’ নামে আবাসন প্রকল্প তৈরি করছে রাজ্য সরকার। বাগানের ভিতর চা শ্রমিকদের জন্য বাড়ি বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের, যা ‘অভিনব’ বলেই দাবি চা মহল্লার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, চা বাগানের ভিতর পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে, তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থান হবে, হোটেল বানানো হবে, দোকান হবে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া হবে।
চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। গত ফেব্রুয়ারি মাসে চা বাগান মালিকদের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠক হয়েছে। সেখানে পাট্টা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল একাধিক চা শ্রমিক সংগঠন। একই ভাবে বাগানে পর্যটনের ক্ষেত্রেও তাঁদের একই বক্তব্য। দেশের অন্যতম পুরনো চা মালিকদের সংগঠনের এক কর্তা বলেন, “মূল সমস্যা জমির। পাট্টা হোক বা পর্যটন কেন্দ্র, চা বাগানের ভিতর তা গড়তে হলে জমি নিতে হবে। সেই জমি রাজ্য সরকারের থেকে লিজ় নিয়ে রাখা। জমির কিছুটা অংশ ফিরিয়ে দিতে হলে, চা উৎপাদনে ক্ষতি হবে।” যদিও মমতার ঘোষণায় চা শ্রমিকেরা উৎসাহিত। চা বাগানের শ্রমিক লাইনের বাড়িগুলি জরাজীর্ণ। সেগুলি সংস্কারের দাবিও দীর্ঘদিনের। মঙ্গলবার ক্রান্তিতে মুখ্যমন্ত্রী জানন, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে প্রায় তিন লক্ষ চা শ্রমিককে ঘর দেওয়ার প্রকল্পও রাজ্য নিয়েছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন, তাতে চা শ্রমিকেরা উৎফুল্ল। আগে, কোনও সরকার এমন পদক্ষেপ করেনি।’’