জলপাইগুড়িতে ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বার হচ্ছে বর্জ্যের ধোঁয়া। ছবি: সন্দীপ পাল।
বাতাসে মিশছে বিষ। ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে। ছাইচাপা আগুনের ধোঁয়ায় ক্ষতিকর উপাদান থাকায় উদ্বেগ পরিবেশপ্রেমীদের। ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে বের হওয়া ধোঁয়ায় ক্যানসার-সহ অন্য প্রাণঘাতী রোগের উপাদান রয়েছে বলে অভিযোগ সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের। সংগঠনের তরফে ওই এলাকা পরিদর্শন করে চিঠি পাঠানো হল জেলা স্বাস্থ্য দফতর,পুরসভা ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডে।
মাসদুয়েক আগে শহর সংলগ্ন বালাপাড়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। দমকল কর্মীরা এসে আগুন আয়ত্তে আনেন। এর পরেও বারকয়েক আগুন নেভাতে আসতে হয় দমকল কর্মীদের। তবে,বর্জ্যের ভিতরে জ্বলতে থাকা ছাইচাপা আগুন নেভাতে পারেনি দমকল। সেখান থেকেই প্রতিনিয়ত নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছে পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক পরিবার। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাবলু বসাক বলেন, ‘‘বাড়ির বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। বিকেলের পরে অনেকেরই চোখ-মুখ জ্বালা করছে বলে শুনেছি।’’
জানা গিয়েছে, বিশেষ মেশিন দিয়ে বর্জ্য সরানোর কাজ করে কিছুটা সুফল মিললেও সমস্যা পুরো মেটেনি। ধোঁয়ায় একাধিক রাসায়নিক বিষাক্ত উপাদান থাকায় ফুসফুসে ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য রোগ হতে পারে বলে দাবি পরিবেশপ্রেমীদের। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ফয়জুর রহমান বলেন, ‘‘কী কারণে আগুন লাগল জানা যায়নি।’’ স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে চলতে থাকলে এই এলাকার মানুষজনের শারীরিক সমস্যা বাড়বে। কটু গন্ধে শ্বাসকষ্টও হচ্ছে অনেকের। শহরের প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশের কথায়, পাহাড়পুর এলাকায় ভোরের আকাশ কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে থাকছে।
জলপাইগুড়ির পুরপ্রধান পাপিয়া পাল বলেন, ‘‘দমকলের সহযোগিতায় আপাতত কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। ভোট মিটলে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের পরবর্তী ধাপের কাজ টেন্ডার ডেকে শুরু হবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না।’’ ফলে,আরও মাসখানেকের আগে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই মিলছে না। সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য এক সঙ্গে ডাঁই করা রয়েছে। প্লাস্টিক ও থার্মোকলে আগুন লেগে বিষাক্ত ধোঁয়া বেরোচ্ছে। মানুষের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ডাম্পিং গ্রাউন্ড সংলগ্ন তিস্তা নদীও দূষণের কবলে পড়ছে।’’ দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে বড় বিপর্যয় হতে পারে বলে অভিমত পরিবেশপ্রেমীদের।