রাজ্যের বিভিন্ন জেলা গ্রন্থাগারে ইংরাজি শেখানোর ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার৷ মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে এ খবর জানান রাজ্যের গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী৷ সোমবার থেকে জলপাইগুড়ি বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয়েছে জেলা বইমেলা। ওই মেলাতেই গ্রন্থাগারমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই ব্রিটিশ কাউন্সিলের সঙ্গে তাঁর দফতরের কথা হয়েছে৷ তারাই জেলায় গ্রন্থাগারে ইংরাজি শেখাবে৷
তবে গ্রন্থাগারের প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ কমছে তা এ দিন স্বীকার করে নেন গ্রন্থাগারমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা গ্রন্থাগারে গিয়ে বই পড়তে চান না৷ ফলে গ্রন্থাগারগুলিতে পাঠকের সংখ্যা কমছে৷’’ গ্রন্থাগারগুলিকে কী ভাবে আরও ভাল করে পরিচালনা করা যায় তা নিয়ে প্রতি মাসে অন্তত একবার গ্রন্থাগারের আধিকারিকদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বৈঠক করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী৷ রাজ্যে ২৪৮০টি গ্রন্থাগার। বই রয়েছে এক কোটি আশি লক্ষ। অথচ পাঠক নামমাত্র। শিলিগুড়িতে মহকুমার বিভিন্ন গ্রন্থাগারের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনামূলক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শিলিগুড়ি মহকুমায় গ্রন্থাগার রয়েছে ২৯টি। সদস্য রয়েছে ২৭ হাজার। বই রয়েছে দু’লক্ষের মতো। অথচ বই পড়া হয় প্রতিদিন ১০/১২টি। মাস দুয়েক আগে ঠিক হয় প্রতিটি জেলায় জেলা গ্রন্থাগারিক, মহকুমাশাসক, জেলাশাসক, এলাকার বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, মেয়র, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক-অধ্যাপকদের নিয়ে বৈঠক করে কী ভাবে হাল ফেরানো যায় আলোচনা করা হবে। সেই মতো ইতিমধ্যেই হাওড়া, উত্তর এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় গিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী। এ দিন শিলিগুড়ি থেকে যান জলপাইগুড়িতে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরে গিয়েও একই ভাবে বৈঠক করবেন। গ্রন্থাগারগুলিতে বিষয়ভিত্তিক বই রাখতে বলা হয়েছে। আচমকা গ্রন্থাগারগুলির কাজকর্ম পরিদর্শন করা হবে। গ্রন্থাগারগুলিতে ‘সাজেশন বুক’ রাখা বাধ্যতামূলক। এক মাসের মধ্যেই তা করতে হবে।
উত্তরবঙ্গে গ্রন্থাগার উন্নয়নের জন্য এখানকার পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে উপদেষ্টামণ্ডলী গড়ার কথা জানান। অত্যাধুনিক মানের ‘ডিজিটাল লাইব্রেরি’র কাজ চলছে। ভবিষ্যতে লাইব্রেরি থেকেই যাতে সরকারের বিভিন্ন দফতরের সুবিধা সম্পর্কে খোঁজ বাসিন্দারা পান সেই ব্যবস্থা থাকবে। এ দিন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, সভাধিপতি তাপস সরকার-সহ মহকুমাশাসক, অধ্যাপকদের নিয়ে বৈঠক হয়। মেয়র বলেন, ‘‘এই প্রথম কোনও মন্ত্রী বৈঠকে ডাকলেন। তিনি শিলিগুড়িতে ‘ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার’ চালু করতে উৎসাহী। পুরসভার তরফে সহযোগিতার কথা জানিয়েছি।’’