রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের সঙ্গে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের সংঘাতে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্তরের কর্মীদের বেতন আটকে গিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক, টিচার্স কাউন্সিলের সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস উপাচার্যের কাছে চিঠি পাঠিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের নভেম্বর মাসের বেতন দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
সোমবার উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বৈঠক করেন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সেখানকার শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজের পরিবেশ ফেরাতে এবং সমস্ত স্তরের কর্মীদের বেতন দেওয়ার স্বার্থে বৈঠকে উপাচার্যের কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার বলেন, “বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে শিক্ষাকর্মী তপন নাগের ‘সাসপেনশন’ প্রত্যাহােরর অনুরোধ জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।” ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপককুমার রায় ফোন ধরেননি। মোবাইল বার্তার জবাব মেলেনি।
এ দিন ‘সিএজি’ রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফেরানোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ধর্না আন্দোলন করে এবিভিপি। সংগঠনের রাজ্য সহ সম্পাদক (উত্তরবঙ্গ) দীপ দত্তের নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যেরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপিও পাঠান। ১২ নভেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের একাংশ অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন। পরীক্ষার বকেয়া সাম্মানিক ভাতা মেটানো ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী তথা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি তপন নাগের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে ওই আন্দোলন। ক’দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া সাম্মানিক মেটানোর কথা ঘোষণা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষাকর্মীদের একাংশের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা, ১২ জন আধিকারিক ও শতাধিক শিক্ষাকর্মীর নভেম্বর মাসের বেতন আটকে গিয়েছে। রেজিস্ট্রার বলেন, “শিক্ষাকর্মীরা কাজ না করায় বেতনের ‘বিল’ তৈরি ও তা ট্রেজারিতে সময় মতো না যাওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্তরের কর্মীর বেতন আটকে গিয়েছে।” তপনের পাল্টা দাবি, শিক্ষাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রেখেই আন্দোলন করছেন। তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক বিজয় দাস বলেন, “তপনবাবুর উপর থেকে ‘সাসপেনশন’ প্রত্যাহারের চিঠি পেলে, সমিতি আন্দোলন তোলার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।”