দু’টি হাতিকে আলাদা করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি বন দফতর। —প্রতীকী চিত্র।
দ্বিতীয় দিনও চিকিৎসা হল না আপালচাঁদ জঙ্গলের জখম সেই মাকনা হাতির। এক খুদে মাকনা হাতির সঙ্গে তার অবাক করা ‘সখ্যের’ জেরে শুক্রবারের মতোই শনিবারেও সব প্রস্তুতি নিয়েও ফিরে আসতে হল বনকর্মীদের। অথচ, দু’টি হাতির বাস ভিন্ন জঙ্গলে। দু’টিই সঙ্গীহারা। হঠাৎই জঙ্গলে এই দুই অপরিচিত বুনো হাতির দেখা, তার পর থেকে দু’জন দু’জনকে কাছছাড়া করছে না। দু’টিতে এক সঙ্গে খেতে গিয়ে ধান খাচ্ছে, গৃহস্থের বাড়িতেও ঢুকে পড়ছে এক সঙ্গে। মাঝখান এই জুটির বন্ধনের জেরে, জখম হাতিটির চিকিৎসাই করতে পারছে না বন দফতর। এ দিনও জখম হাতিটির উপরে নজরদারি চালান বনকর্মীরা। পটকা ফাটিয়ে, সাইরেন বাজিয়ে দু’টি হাতিকে আলাদা করার চেষ্টা করেও সফল হননি তাঁরা। আজ, রবিবার ফের দু’টি হাতিকে আলাদা করে জখম হাতির অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করা হবে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।
দিন কয়েক আগে আপালচাঁদের জঙ্গলে বুনো হাতিদের নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে জখম হয়েছিল একটি পূর্ণবয়স্ক মাকনা। লড়াইয়ের ফলে একটি মাকনা হাতি জখম হয় এবং লেজের পাশের অংশে গভীর ক্ষত হয়। যন্ত্রণা ভুলতে জখম হাতিটি কখনও নদীতে নেমে, কখনও ক্ষতস্থানে জল ছিটিয়ে নিরাময়ের উপায় খোঁজে। বন দফতরের নজরে আসতে চিকিৎসক দল ডেকে এনে কলাগাছে ভরে ওষুধ খাওয়ানো শুরু হয়। কিন্তু তাতে তো পুরো চিকিৎসা হবে না। ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। গত শুক্রবার সেই চেষ্টা করতে গিয়ে দেখে জখম হাতিটির সঙ্গে জুটেছে একটি কমবয়সী মাকনা। সেটি কোনও ভাবেই জখম হাতিকে ছেড়ে যাবে না। ফলে জখম হাতিটিকে ঘুম পাড়ানি ডার্ট ছোড়া সম্ভব হয়নি, অস্ত্রোপচারও হয়নি।
শনিবারও কখনও ধান খেতে, কখনও জঙ্গলে দুই হাতি এক সঙ্গে বিচরণ করেছে। কখনও এতটুকু তারা কাছছাড়া হয়নি যে একটিকে ঘুমপাড়ানি ডার্ট ছোড়া যাবে। বনকর্মীদের দাবি, জখম হাতিটিও দলছুট। কমবয়সী হাতিটি বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলে ঢুকে আপালচাঁদ এলাকায় কোনভাবে দলছুট হয়ে পড়ে। বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলের সঙ্গে অপরিচিত কমবয়সী হাতিটি জঙ্গলে পূর্ণবয়স্ক মাকনা হাতিটিকে দেখে সঙ্গে ভিড়ে যায়।
বৈকুণ্ঠপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক রাজা এম বলেন, “খুবই বিস্ময়কর ঘটনা। কী ভাবে দু’জনে এক সঙ্গে ভিড়ে গেল! বনকর্মীদের দল টানা নজরদারি চালাচ্ছে। এক মুহূর্তও দুটি কাছছাড়া হচ্ছে না। যাই হোক, দুটি হাতিকে আলাদা করতে হবে, না হলে জখম বুনোটির চিকিৎসা হবে না।”