কোচবিহার দাপিয়ে বেড়ানো হাতিকে জঙ্গলে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলছে। — নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন ধরে কোচবিহারের দিনহাটা ও মাথাভাঙা মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় তাণ্ডব চালিয়ে অবশেষে জঙ্গলে ফিরছে দামালবাহিনী। মাথাভাঙা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙা পঞ্চায়েতের পাটাকামারি এলাকা থেকে দলের শেষ হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে কুনকি হাতি এবং ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে চাপিয়ে জলদাপাড়ার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মেডিক্যাল চেকআপের পর হাতিটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে দিনহাটার মাতাল হাটের লক্ষ্মীর বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রথমে ছ’টি হাতির পালকে দেখা যায়। এর পর ওই এলাকায় তাণ্ডব চালিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে মাথাভাঙা-২ ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় বিচরণ করতে দেখা যায় হাতির পালটিকে। হাতির হানায় মৃত্যু হয় মোট চার জনের। এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, বন দফতরের কার্যকারিতা নিয়ে। হাতিগুলিকে জঙ্গলে ফেরাতে কোচবিহার ডিভিশন, জলপাইগুড়ি ডিভিশন এবং জলদাপাড়া-বক্সা ডিভিশনের আধিকারিকদের কালঘাম ছুটে যায়। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাত থেকে অভিযানে নামেন বনকর্মীরা।
বন দফতরের দাবি, শুক্রবার বিকেলের পর উনিশবিশার তোর্সা নদীর সেতু সংলগ্ন জাতীয় সড়ক পেরিয়ে ছ’টির মধ্যে চারটি হাতিকে পাতলাখাওয়া জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন বনকর্মীরা। একটি হাতি মাথাভাঙায় চলে গেলেও রাতের দিকে পুনরায় রুইডাঙা এলাকায় ফিরে আসে। এর পর সেটিকেও ফালাকাটা পার করে জলদাপাড়া জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয় বন দফতর। আর একটি হাতি ঘোকসাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের রুইডাঙা এলাকায় বিচরণ করতে থাকে। সেটিকে সারা রাত বন দফতরের কর্মীরা পাহারা দেন। সকালের দিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে হাতিকে কাবু করে কুনকি হাতি ও ক্রেনের সাহায্যে ট্রাকে চাপিয়ে জলদাপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেয় ট্রাক।
কোচবিহার ডিভিশনের এডিএফও বিজন নাথ বলেন, ‘‘ছ’টি হাতির মধ্যে পাঁচটি হাতিকেই আমরা জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয়েছি। অপর একটি হাতি যেটি রুইডাঙা পাটাকামারি এলাকায় আটকেছিল, সেটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে ট্রাকে তুলে আমরা জলদাপাড়া বা বক্সার জঙ্গলের উদ্দেশে পাঠিয়ে দিয়েছি। হাতির হানায় আর নতুন করে কোনও দুর্ঘটনা বা হতাহতের খবর নেই। জলদাপাড়া রেঞ্জ, বক্সা রেঞ্জ ও কোচবিহার রেঞ্জের সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীর সহযোগিতায় সব ক’টি হাতিকেই নিরাপদে জঙ্গলে ফেরাতে পেরেছি।’’