হাতির ভয়ে মাঠেই চলছে ক্লাস। — নিজস্ব চিত্র।
হাতির হানায় অতিষ্ঠ স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে গ্রামবাসীরা। গত রবিবার থেকে পর পর হাতির পালের হানা মিড ডে মিলের গুদামঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির অনতিদূরে বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের ছোটা ফাপড়ির নেপালি প্রাইমারি স্কুলে। বিগত কয়েক দিন ধরেই বন থেকে রোজ হাতি হানা দিচ্ছে স্কুলে। মঙ্গলবার রাতে আবার হাতি হানা দেয় স্কুলে। মিড ডে মিলের ঘরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়ে গুদামঘরের সামগ্রী খেয়ে আবার ফিরে যায় জঙ্গলে৷
স্কুলে হাতির হামলায় তটস্থ গ্রামবাসীরা৷ অভিভাবকদের চাপের মুখে পড়ে পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুল প্রাঙ্গণেই ক্লাস বসে৷ স্কুলের টিচার ইনচার্জ কুসুম বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন৷ আমাদের স্কুলে প্রবেশেও বাধা দেওয়া হয়৷ তাঁরা স্কুলে বাচ্চাদেরও পাঠাচ্ছেন না। খুব কম সংখ্যক বাচ্চা স্কুলে এসেছে। আসলে হাতির ভয়ে আমরা সকলেই তটস্থ৷ বাচ্চাদের নিয়ে মাঠে ক্লাস করাচ্ছি। অভিভাবকদের দাবি, স্কুল দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার। দেওয়াল হবে এ কথা শুনছি বহুদিন ধরে, কিন্তু হয়নি এখনও। অথচ, ডিসেম্বর থেকে প্রায়ই হাতির হানা চলছে। বাচ্চারা মিড ডে মিলও পাবে না, কারণ হাতি খেয়ে গিয়েছে সব।’’
অভিভাবক প্রিয়াঞ্জন তামাং বলেন, ‘‘মাসখানেকের উপর হাতির তাণ্ডব চলছে৷ গ্রামের বাকি এলাকা থেকে স্কুল প্রাঙ্গণে হাতির আক্রমণ অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। স্কুলে মিড ডে মিলের খাবার রাখার ঘর ভেঙে সামগ্রী খেয়ে চলে যাচ্ছে। কোন ভরসায় আমরা বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাব? একটা সীমানা প্রাচীরের বহু দিনের আবেদন এখনও পূরণ হল না!’’
অন্য দিকে, বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের ডাবগ্রামের রেঞ্জার শ্যামাপ্রসাদ চালকাদার বলেন, ‘‘টিম প্রতিনিয়ত কাজ করছে৷ কিন্তু খবর সঠিক সময়ে না পাওয়ার জন্য নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে৷ মিড ডে মিলের ঘরে রাখা খাবারের লোভে হাতি ঢুকছে স্কুলে৷ এর আগে বিভিন্ন সংস্থার সাহায্য নিয়ে একটা ফেন্সিং করা গিয়েছিল। তাতে হাতির উপদ্রব কিছুদিন বন্ধ ছিল৷ কিন্তু তার পরেই ফেন্সিং চুরি হতে লাগল৷ পুনরায় ফেন্সিং দেওয়ার চেষ্টা করছি৷ স্কুলকে বলেছি, আপনারা মিড ডে মিলের সামগ্রী রেঞ্জ অফিসে রাখুন। সেখান থেকে আপনাদের প্রতিদিন পাঠিয়ে দেব।’’ সব মিলিয়ে হাতির তাণ্ডবে স্কুলে পঠনপাঠন লাটে ওঠার জোগাড়।