প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে ভোট করাতে গিয়ে এ বার ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন। উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই এই কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ছে। জলপাইগুড়ি জেলায় বাড়ছে সাতশোর কাছাকাছি। কমিশন সূত্রে এই কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচন কমিশন থেকে অতিরিক্ত ভোট কেন্দ্রগুলির তালিকা চূড়ান্ত করে জেলা প্রশাসনগুলিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত সব জেলা প্রশাসনই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ভোট কেন্দ্রগুলির বিবরণ জানিয়ে দেবে। কোনও কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি-অভিযোগ থাকলে, তা-ও জানানো যাবে। জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে এই তালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি জেলায় মোট ২৫৬২টি কেন্দ্রে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোট নেবে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের দাবি, এত বেশি কেন্দ্রে অতীতে কোনও দিন ভোট গ্রহণ হয়নি।
কোভিডের কারণেই ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণের লেখচিত্র (গ্রাফ) নীচের দিকে নামলেও এখনও সংক্রমণ পুরোপুরি থামেনি। সকলের টিকাকরণও হয়নি। সে কারণেই সামাজিক দূরত্ব বিধিতে কোনও খামতি থাকুক, চাইছে না কমিশন। বিধানসভা ভোট প্রস্তুতির শুরুতেই কমিশন জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও ভোট কেন্দ্রেই যাতে গাদাগাদি ভিড় না হয়ে যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। কমিশন থেকে একটি ফর্মুলাও দেওয়া হয়। কোনও ভোট কেন্দ্রে যদি ১০৫০ জনের বেশি ভোটার থাকে, তবে সেই কেন্দ্রেই একটি অক্সিলিয়ারি তথা সহায়ক বুথ তৈরি হবে। মূল ভোট কেন্দ্র চত্বরেই ওই বুথ হবে। কোনও কেন্দ্রে ১০৫০-এর বেশি ভোটার থাকলে মূল এবং সহায়ক দুই বুথের মধ্যে ভোটারদের আধাআধি ভাগ করে দেওয়া হবে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বলেন, “কমিশনের নির্দেশ মতো বুথ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যে সব স্কুল বা বুথে প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের সিঁড়ি নেই বা অন্য পরিকাঠামো প্রয়োজন, সেগুলি তৈরি করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা হচ্ছে। পরিকাঠামো তৈরি করতে রাজ্যের শিক্ষা দফতর কিছু বরাদ্দও করেছে।”
যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে, সেটিই চূড়ান্ত ধরে নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। প্রতিটি বুথের জিপিএস অবস্থান চিহ্নিত করা হচ্ছে। সব বুথেই সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে ধরে নিয়ে পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। কিছু বুথে ভোট প্রক্রিয়া সরাসরি ওয়েব সম্প্রচার করা হবে। কোন বুথে সেগুলি হবে, তা বাছাইয়ের কাজ চলছে। সূত্রের খবর, কলকাতা থেকে কমিশনের এক প্রতিনিধিদল এসে বুথগুলি দেখতেও শুরু করেছে। সব বুথে মোবাইল সংযোগের শক্তি পরীক্ষা করে দেখার কাজও চলছে। সূত্রের খবর, একটি এজেন্সিকে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন বুথে কোন কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালভাবে পাওয়া যায় এবং কোন নেটওয়ার্ক দুর্বল, সেগুলিও খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, “কমিশন প্রযুক্তিগত এমন পদক্ষেপ এ বার করছেন, যাতে ইচ্ছে হলেই যে কোনও বুথের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া সরাসরি দেখা যায়।”