Shopping

কেনাকাটার ভিড়ে আশঙ্কা

পুজোর বাজার ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে।শহরগুলির দোকান-বাজারে ভিড় বাড়ছে। শপিংমল ও বড় কাপড়ের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়েছে। বেশির ভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। হাত জীবাণুমুক্ত করারও ব্যবস্থা নেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০৬
Share:

ঠাসাঠাসি: পুজোর বাজারে কেনাকাটার ভিড়। মাস্কও নেই অনেক ক্রেতার মুখে। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র।

আজ রবিবার। পুজোর আগে আর মাত্র একটি রবিবার বাকি। এই দু’দিনই পুজোর কেনাকাটায় ভিড় উপছে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে কিছু দিন ধরেই দেখা যাচ্ছে যে গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু তার পরেও কেনাকাটা করতে এসে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকে। মাস্ক যেমন পরছেন না, তেমনই সামাজিক দূরত্ববিধিও মানছেন না। গাদাগাদি করে কেনাকাটা করায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শনিবারও পুজোর বাজারে একই ছবি। অথচ পুলিশ, প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

মালদহ

শনিবারও নেতাজি পুরবাজারে সামাজিক দূরত্ববিধিকে তুড়ি মেরে গাদাগাদি করে কেনাকাটা করলেন একদল বাসিন্দা। বেশির ভাগেরই মাস্কের বালাই নেই, সঙ্গে স্যানিটাইজ়ারও নেই। বিক্রেতারাও মাস্ক ছাড়া দিব্যি ব্যবসা করছেন। দোকানে এলে ক্রেতাদের হাত জীবাণুমুক্ত করানোর কথা ব্যবসায়ীদের, কিন্তু তাও মানা হচ্ছে না ইংরেজবাজারের নেতাজি পুর বাজার, নেতাজি কমার্শিয়াল মার্কেট থেকে শুরু করে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন বাজার ও অন্য বাজারে। আজ পুজোর আগে শেষ দ্বিতীয় রবিবার। তাতে কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন? গত কয়েক দিন ধরে পুজোর কেনাকাটায় স্বাস্থ্যবিধি উধাও হলেও পুলিশি নজরদারির বালাই নেই! মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীদের বারবার বলছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে। শনিবার সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভা ছিল, সেখানেও আমরা সতর্ক করেছি। তার পরেও যদি কেউ কিছু না মানে পুলিশ পদক্ষেপ করুক।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘বাজারে পুলিশি নজরদারি চালুর চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

রায়গঞ্জ

রায়গঞ্জের দেবীনগরের বাসিন্দা পেশায় চাল ব্যবসায়ী ভবেন্দ্রনাথ মজুমদারকে শনিবার দুপুরে শহরের মোহনবাটী এলাকার ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান থেকে পোশাক কেনাকাটা করতে দেখা গেল। শপিংমল বা বড় পোশাকের দোকান বাদ দিয়ে কেন ফুটপাতের দোকান থেকে পোশাক কিনছেন? ভবেন্দ্রনাথ বললেন, “শপিংমল ও বড় কাপড়ের দোকানগুলিতে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়েছে। বেশির ভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। হাত জীবাণুমুক্ত করারও ব্যবস্থা নেই। তাই ফুটপাতের দোকান থেকেই পুজোর কেনাকাটা করছি।” শনিবার রায়গঞ্জ থানার পুলিশ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে প্রতিটি শপিংমল ও পোশাকের দোকানে করোনা বিধি মেনে ব্যবসা করার অনুরোধ করেছেন। রায়গঞ্জ মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “সংগঠনের তরফে রায়গঞ্জের প্রতিটি শপিংমল ও পোশাকের দোকানের মালিককে করোনা বিধি মেনে ব্যবসা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও ক্রেতাদের মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।” রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “পুলিশের তরফে করোনা বিধি মেনে ব্যবসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও সমস্যা না মিটলে প্রয়োজনে পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ করবে।”

বালুরঘাট

পুজোর বাজার ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে। বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর শহরগুলির দোকান-বাজারে ভিড় বাড়ছে। সন্ধে থেকে কাপড়, জুতোর দোকানে ক্রেতাদের লম্বা লাইন পড়তে শুরু করেছে। পুজোর বেশি দিন বাকি না থাকায় এখনই অধিকাংশ বাসিন্দা কেনাকাটা সেরে ফেলতে চাইছেন। তাই শনিবার যেমন দোকানগুলিতে ভিড় ছিল, আজ রবিবার ছুটির দিনে সেই ভিড় আরও বাড়বে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা। এ দিকে, ভিড় বাড়ায় শিকেয় উঠেছে দূরত্ব বিধি এবং মাস্ক না পরার অভ্যেস, এমনই অভিযোগ। ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছেই। বুনিয়াদপুরের কাপড় ব্যবসায়ী অমিত শীল বলেন, ‘‘ছুটির দিনে ভিড় বাড়ছে। আমরা সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে ক্রেতাদের দোকানে দাঁড়াতে বলছি।’’ জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, তারা বাজারগুলিতে নজরদারি চালাবে। তাই ব্যবসায়ীরা যাতে সামাজিক দূরত্ববিধি কঠোরভাবে মেনে চলেন।

তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত সেন, গৌর আচার্য ও নীহার বিশ্বাস

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement