অস্বাস্থ্যকর: মশারির বালাই নেই। শয্যায়, মেঝেতে একই সঙ্গে থাকতে হচ্ছে ডেঙ্গি বা জ্বরের রোগীদের সঙ্গে অন্য রোগীদেরও। মালদহ মেডিক্যালের মেল মেডিসিন ১ ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা কেবিন রয়েছে। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ও শিশুবিভাগে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের আলাদা করে রাখার পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে ওই তিনটি ওয়ার্ডে জ্বর ও ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের সাধারণ রোগীদের সঙ্গে ভর্তি রেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ফলে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন রোগীরা।
হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘জায়গার অভাবে পুরুষ মেডিসিন ও শিশুবিভাগে এখনও পর্যন্ত জ্বরের রোগীদের আলাদা করে রাখার পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা কেবিন করা হলেও সেখানেও জায়গার অভাবে ন’জনের বেশি রোগীকে রাখা সম্ভব হয় না।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন তাঁরা। গত দু’মাসে রায়গঞ্জ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৫ জন রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। বর্তমানে জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন, পুরুষ মেডিসিন ও শিশুবিভাগে ২৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মহিলা মেডিসিন ও পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চারজন রোগীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁদেরকে হাসপাতালের তরফে মশারির নীচে রাখা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার জ্বরের উপসর্গ নিয়ে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হন হেমতাবাদের বাহালা এলাকা বাসিন্দা লিলিভা খাতুন। একই উপসর্গ নিয়ে ওইদিন ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন কালিয়াগঞ্জের কালুডাঙার বাসিন্দা মনসুরা বেগম। লিলিভা ও মনসুরা জানান, রক্ত পরীক্ষার পর বুধবার রাতে তাঁদের ডেঙ্গি হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। নার্সদের নির্দেশে তাঁরা সাধারণ রোগীদের মাঝেই শয্যায় মশারি টাঙিয়ে রয়েছেন।
বুধবার সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে লিলিভার পাশের শয্যায় চিকিৎসাধীন রায়গঞ্জের ঝিটকিয়া এলাকার বাসিন্দা সুপ্রিয়া দেবশর্মা। সুপ্রিয়া বাবা সুবোধ বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার মেয়েকে ডেঙ্গি ও জ্বরের রোগীদের মাঝে রেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। বহু জ্বরের রোগীর রোগ নির্ণয় হয়নি। ফলে ডেঙ্গি রোগীকে কামড়ানো মশা আমার মেয়েকে কামড়ালে মেয়েরও ডেঙ্গি হতে পারে বলে আশঙ্কা করে আতঙ্কে রয়েছি।’’
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত চারদিন ধরে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রায়গঞ্জের বুড়াকামাত ও মাড়াইকুড়া এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ ফরিদ ও রনি সরকার। তাঁরা জানিয়েছেন, রক্তপরীক্ষার পর তাঁদের ডেঙ্গি হয়েছে বলে বুধবার চিকিৎসক জানিয়েছেন। কিডনির সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি হন হেমতাবাদের রণহট্টা এলাকার বাসিন্দা সাহেদুর রহমান।