Duare sarkar

গ্রামে রাতে শিবির দুয়ারে সরকারের

উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর২ ব্লকের মহানন্দা নদীর চরে বাংলা-বিহার সীমানায় চাকুলিয়ার টিটিয়া গ্রামে শুক্রবার রাতে বসে দুয়ারে শিবিরের ভ্রাম্যমাণ শিবির।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

টিটিয়া শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৫৫
Share:

মেঝেয় বসে আবেদন নিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

কাকভোর হতে পেটের টানে বেরিয়ে পড়েন শহরে। আবার ফিরতে ফিরতে রাত। এটাই রোজকার রুটিন। তার উপরে রয়েছে নদীর বাধা। যোগাযোগ ব্যবস্থা সে ভাবে নেই। সরকারি পরিষেবা পেতে ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে যেতে গেলে কমপক্ষে ১৫ কিমি ঘুরপথ পাড়ি দিতে হবে। যাতায়াতের সে খরচ বহনও দিনমজুর পরিবারগুলির কাছে বেশ কষ্টসাধ্য। তাই ওই গ্রামে পরিষেবা দিতে রাতেই বসল ‘দুয়ারে সরকার’।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর২ ব্লকের মহানন্দা নদীর চরে বাংলা-বিহার সীমানায় চাকুলিয়ার টিটিয়া গ্রামে শুক্রবার রাতে বসে দুয়ারে শিবিরের ভ্রাম্যমাণ শিবির। সঙ্গে ছিলেন বিডিও কানাইয়াকুমার রায়-সহ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। বাড়ি বসে সরকারি পরিষেবা পেয়ে প্রশাসনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ গ্রামবাসী। টিটিয়া-সহ তিনটি গ্রামের বাসিন্দাদের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দিতে আবেদন পত্র জমা নেওয়া হল এ দিন।

এই দুর্গম গ্রামের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের দাবি, এত দিন জানতেন না ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির কেমন হয়। সন্ধ্যা তখন ৭টা। এক সঙ্গে এত লোক দেখে তো হকচকিয়ে যান গ্রামের মানুষ। বিডিও তাঁদের বোঝান সরকারি প্রকল্পগুলো সম্পর্কে। মেঝেয় প্লাস্টিক পেতে বসে গ্রামবাসীদের সুবিধার জন্যই যে রাতে এই আয়োজন সে কথাও বোঝালেন। বিডিও-সহ অন্য দফতরের কর্মীরাই আবেদনপত্র পূরণ করে জমা নিলেন। সবার সমস্যা শুনে বেশির ভাগের সমাধান সেখানেই করার চেষ্টা করলেন আধিকারিকেরা। ‘খাদ্যসাথী’, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর জন্য প্ৰয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নেওয়া হল। নদীপাড়ের এই বাসিন্দাদের মৎস্য দফতরের ‘ফিশারম্যান’ নিবন্ধীকরণও করানো হল।

Advertisement

এই গ্রামটিতে নানা সম্প্রদায়ের বাসিন্দার বসবাস। কেউ দিনমজুর, কেউ নদীতে মাছ ধরেন। প্রশাসনের কর্তারা খোঁজ করে দেখেন, কেন ওই গ্রামের লোকজন শিবিরে আসছেন না। সমীক্ষায় জানা যায়, গ্রামের বেশির ভাগ লোক কাকভোরে বেরিয়ে পড়েন ডালখোলা, কিসানগঞ্জ শহরে কাজের খোঁজে। সমস্যা মেটাতে তাই ওই গ্রামে রাতে শিবিরর সিদ্ধান্ত হয়।

গ্রামের বাসিন্দা তফিজুল হক, রতন রবিদাসরা এমন পরিষেবা পেয়ে খুশি। তাঁদের কথায়, ‘‘আমাদের কথা ভেবে রাতে এ ভাবে প্রশাসন দুয়ারে এসে পরিষেবা দেবে, তা কল্পনা করতে পারছি না! আমরা খুশি।’’

প্রশাসনের একটি অংশের দাবি, এমন অনেক প্রত্যন্ত এলাকা রয়েছে, যেখানকার মানুষজন অস্থায়ী শিবিরে আসতে আগ্রহ দেখাননি। তাই সরকারি প্রকল্পের সুফলও পাননি। ভ্রাম্যমাণ শিবিরের মাধ্যমে ওই সব এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছনোই নিশ্চিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার।

বিডিও কানাইয়াকুমার রায় বলেন, ‘‘মানুষদের প্রতিকূল জীবনযাত্রার কথা মাথায় রেখে, মূলত এই উদ্যোগ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement