মদ্যপের মার খেলেন অন্তঃসত্ত্বা

পূর্ব নিউ আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী তুষ্ট সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:২৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সিগারেট ধরাতে একটা দেশলাই কাঠি চাওয়ার পরেই ঘটে গেল ধুন্ধুমার। দু’টি বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে এক অন্তঃসত্ত্বাকে মারধর করা হয় বলেও দাবি করল আক্রান্ত পরিবার। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠল রাতের নিরাপত্তা নিয়েও।

Advertisement

পূর্ব নিউ আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী তুষ্ট সরকার। তিনি স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূ নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার রাতে। ওই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি যখন সদর দরজা বন্ধ করছিলেন, দুই মদ্যপ যুবক তাঁর কাছে সিগারেট ধরাতে দেশলাই চায়। তিনি দিতে অস্বীকার করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তখনকার মতো ওই দুই যুবক সেখান থেকে চলে যায়। অভিযোগ, তার খানিকক্ষণ বাদে ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে এসে তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে ওই দু’জন। যা শুনে পাশের বাড়ির বাসিন্দা সুব্রত ভদ্র ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দুই যুবককে চলে যেতে বলেন। এর পর ওই দুই যুবক তুষ্ট ও সুব্রতকে খুনের হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় বলে অভিযোগ।

তুষ্ট ও সুব্রতর অভিযোগ, ঘটনা পরদিন, বুধবার রাত অবধি গড়ায়। তাঁদের দাবি, সেই রাতে অভিযুক্ত দুই যুবক ১০-১২ জনকে নিয়ে প্রথমে তুষ্টর বাড়ি, তার পরে সুব্রতর বাড়িতে চড়াও হয়। অভিযোগ, তুষ্টর বাড়ির সদর দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে তারা। তার পরে চড়াও হয় সুব্রতর বাড়িতে থাকা একটি দোকানের উপরে। অভিযোগ, সেখানেও বাড়ির ভিতরে ভাঙচুরের পরে ওই দুষ্কৃতীরা ঠাকুর ঘরে ভাঙচুর করে।

Advertisement

পুলিশের কাছে সুব্রত অভিযোগ করেন, ‘‘আমার ভাইয়ের স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনার সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুষ্কতীরা তাঁকে লাথি-ঘুসি মারে। যার জেরে জ্ঞান হারান ওই বধূ। এখনও তিনি অসুস্থ।’’ সুব্রতর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, তাদের দোকানে ভাঙচুরের ফলে প্রায় ৭৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। দুষ্কতীরা দোকান থেকে নগদ সতেরো হাজার টাকা নিয়ে পালায় বলেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তুষ্টর স্ত্রী সুমিতা সরকারের অভিযোগ, ‘‘গ্রিল ভেঙে দুষ্কতীরা বাড়িতে ঢুকলে আমরা চেঁচামেচি শুরু করি। তখন তারা আমাদের লক্ষ করে গুলি চালায়।’’ সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরই তুষ্টর বাড়ির লোকেরা থানায় ফোন করেন। পুলিশ আসার আগেই দুষ্কতীরা তুষ্টর বাড়ি থেকে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু জিনিস তুলে নিয়ে গুলি ও বোমা ছুড়তে ছুড়তে পালায়।

রাতের আলিপুরদুয়ার শহরে এর আগেও দুষ্কৃতী হানার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার রাতের ঘটনা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন উঠে গেল। যদিও জেলার পুলিশ কর্তাদের দাবি, রাতের আলিপুরদুয়ারে যথেষ্ট নিরাপত্তা রয়েছে। সে জন্যই রাত দু’টোর সময়ে ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় পৌঁছে যায়। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনায় থানায় জমা পরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement