নিষ্প্রাণ: ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে যুবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিঙের সদর থেকে শিলিগুড়ি শহরের অলিগলি, সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে মাদকের কারবারিদের জাল। পুলিশ-প্রশাসনের অন্দরের খবর, প্রথম সারির পুলিশ কর্তা থেকে ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের শীর্ষ অফিসারদের একাংশ এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই পুলিশ বেশকিছু অভিযানে নেমে বিধি বেঙে বিক্রি হওয়া ওষুধ (যা নেশার কাজে ব্যবহার হচ্ছে) বাজেয়াপ্ত করেছে। তার মধ্যে রয়েছে কাশির সিরাপও। শিলিগুড়ি শহরের অন্তত ১৫টি ওয়ার্ডে ওই মাদক-কারবারিদের জাল ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা পুলিশেরই।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেছন, ‘‘শহরে মাদকের কারবারিদের কড়া হাতে দমন করতে অভিযানের নির্দেশ দিয়েছি। বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে নেশার জন্য ব্যবহার করা হয় এমন ওষুধ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আরও অভিযোগ মিলেছে। সেখানেও নজর রাখা হচ্ছে। এই অভিযান চলবে।’’
শুধু পুলিশ নয়, ড্রাগ কন্ট্রোল দফতরের কাছেও মাদকের কারবার নিয়ে অভিযোগ গিয়েছে। ওই দফতরের সহকারী অধিকর্তা (উত্তরবঙ্গ) অচিন্ত্য দাস বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেলেই অভিযান চালাই। ওষুধের ব্যবসায়ীদের সতর্ক করি। এক সপ্তাহ আগেই তিন জন ওষুধ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওযা হয়েছে।’’’ তিনি জানান, পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান অতীতেও হয়েছে, আগামী দিনেও এই অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ী একান্তে জানান, মূলত সিকিম, দার্জিলিঙেই নানা ধরনের ওষুধ দিয়ে নেশার প্রবণতা বেশি। পাহাড়ে বসেই একাধিক চক্র সমতলে জাল ছড়াচ্ছে বলে তাঁদের আশঙ্কা। দার্জিলিং পুলিশের এক কর্তা জানান, পাহাড়ে নিয়মিত অভিযান চলছে, তার জেরেই প্রচুর নেশার ওষুধ উদ্ধার হচ্ছে, সন্দেহভাজনও ধরা পড়ছে।
ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গলের (ফোসিন) সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আমরা ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলি। প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনও ওষুধ বিক্রি করার কথা নয়। ব্যবসায়ীদের আরও সজাগ থাকার অনুরোধ জানাব।’’ তবে শিলিগুড়ির নাগরিক সমিতির মুখপাত্র দুর্গা সাহা বা আইনজীবী রতন বণিকরা মনে করেন, লাগাতার অভিযান হলে মাদকের কারবারিরা শহরে দাঁত ফোটাতে পারবে না। পুলিশ কমিশনার জানান, অভিযান চলছে। তাতে আরও গতি আনতে ডিসিদের তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।