ধীর গতিতে চলছে দ্বিতীয় ফরাক্কা সেতুর নির্মাণের কাজ। ছবি: স্বরূপ সাহা
নির্ধারিত সময়সীমার অন্তত ছ’মাস আগে, ফরাক্কার দ্বিতীয় সেতু তৈরির কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। কিন্তু ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বা নির্মাণ সংস্থা কিন্তু এমনটা মনে করছে না। তাদের মতে, এখনও সেতুর অনেকগুলি স্তম্ভ বসানোর কাজ বাকি। তার পরে, আরও যে সমস্ত কাজ বাকি রয়েছে, সে সব শেষ করতে নির্ধারিত সময় লাগবেই।
৩৪ জাতীয় সড়কের ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প অতিকর্তা ওমনাথ বিহারী শুক্রবার বলেন, ‘‘বর্ষা ও জলস্তর বেশি থাকায় বছরের ছ’মাস সেতুর কাজ এখানে বন্ধ রাখতে হয়। ফলে, ২০২৪ সালের জুন মাসের আগে কাজ শেষ করার সম্ভব নয়।’’ নির্মাণকারী সংস্থার কর্মীদেরও মত তাই।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মালদহের বৈষ্ণবনগর সংলগ্ন গঙ্গা নদীতে নির্মীয়মাণ ফরাক্কার দ্বিতীয় সেতুর কাজ দেখতে যান কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাটিল। সেখানে কাজের অগ্রগতি দেখে তিনি দাবি করেন যে, নির্ধারিত সময়ের (২০২৪ সালের জুন মাস) অন্তত ছ’মাস আগে যাতে কাজ শেষ করা যায়, তা দেখবেন।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর কাজ শুরু হয়। তার পরে দুর্ঘটনা, নকশা বদল আর করোনার প্রকোপে প্রায় দু’বছর কাজ বন্ধ ছিল। এখন পর্যন্ত নির্মীয়মাণ এই সেতুর ৮৪টি প্রস্তাবিত থামের মধ্যে ৬৪টি তৈরি হয়ে গিয়েছে। আরও ২০টি থাম নির্মাণের কাজ বাকি রয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মতে, গঙ্গা নদীর যে অংশে সেতুর কাজ হচ্ছে সেখানে জলস্তর এতটাই বেশি থাকে যে জুন মাস থেকে টানা ছ’মাস কাজ বন্ধ থাকে। এ বারেও বন্ধ ছিল। দিন ২০ আগে জল নেমে যাওয়ায়, কাজ শুরু করা গিয়েছে।
এ ছাড়া, এখন যে ২০টি স্তম্ভ নির্মাণ করতে হবে তার কাজ শুরু হবে জলের নীচে। সেখানে এখন জলস্তর রয়েছে ন’মিটার। এ ছাড়া ‘পাইলিং’-এর কাজ করতে হবে জলের নীচে অন্তত ৬০ মিটার গভীর পর্যন্ত। এ ধরনের ১৫০টি ‘পাইলিং’-এর কাজ এখনও বাকি রয়েছে। সে সমস্ত কাজ যদি আগামী জুন মাসের মধ্যে শেষ না করা যায়, তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা মুশকিল। সেখানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কথা মতো ছ’মাস আগে সেতুর কাজ শেষ করা কী ভাবে সম্ভব, তা বুঝতে পারছেন না বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও নির্মাণ সংস্থার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।