দূষণ: এ ভাবেই ট্রেনে ডলোমাইট ওঠানো নামানো হয় দলগাঁও স্টেশনে। ছবি: নারায়ণ দে
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছাড়াই দলগাঁও স্টেশনে ডলোমাইট তুলছে রেল। এমনই অভিযোগ পরিবেশপ্রেমীদের। রেলের অবশ্য দাবি, পর্ষদের নির্দেশের বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই।
পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, ২০০৩ সালে পর্ষদ শহরাঞ্চলে ডলোমাইট ওঠানো-নামানো বারণ করেছিল। তারপরে নতুন কোনও নির্দেশ পর্ষদ দেয়নি। সে কারণে আগের নির্দেশই বহাল রয়েছে বলে তাঁদের দাবি। তারপরেও রেলের ডলোমাইট ওঠানো-নামানো পুরোপুরি অবৈধ বলে দাবি পরিবেশপ্রেমীদের। সমস্যার কথা জানেন পরিবেশমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। সম্প্রতি পর্ষদ থেকে তাঁকেও তা জানানো হয়েছে। শুভেন্দুবাবু বলেন, “রেলকে ফের জানাতে হবে। ওখানকার মানুষের সমস্যার কথা জানি।”
রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদলতে দারস্থ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “রেল মন্ত্রকের কাছে দলগাঁও স্টেশন থেকে ডলোমাইট তোলার জন্য দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কোনও ছাড়পত্র নেই। এখানে ডলোমাইট তোলার জন্য এলাকায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন অনেকেই। শিশুদের শ্বাসের রোগ হচ্ছে। চর্মরোগের স্বীকার হচ্ছেনও অনেকেই।”
ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রতিদিন ট্রাকে করে ডলোমাইট আনায় চারিদকে ধুলো ওড়ায় প্রচণ্ড অসুবিধে হচ্ছে। এলাকার রাস্তাও ভেঙে গিয়েছে। সুভাষবাবু জানান, বিষয়টি নিয়ে রেলমন্ত্রকের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার যুবকরা জানাচ্ছেন, দিনরাত ট্রেনে ডলোমাইট লোড করা হয়। বর্ষা ছাড়া বছরের অন্য সময় চারিদিকে ধুলো ওড়ে। পরিবেশ দূষণ নিয়ে কোনও চিন্তাভবানা নেই রেল কর্তৃপক্ষের। ডলমাইটের ট্রাকের জন্য এলাকায় বহু পথ দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা জানান, এলাকার বাসিন্দারা নানা সমস্যায় ভুগছেন। বীরপাড়া এলাকাটি জনবহুল। সেখানে ডলোমাইট তোলায় নানা সমস্যা হচ্ছে। বাসিন্দাদের নানা রোগ হচ্ছে খারাপের পাশাপাশি যানজট হচ্ছে এলাকায়। তাঁর দাবি, ‘‘রেল কর্তৃপক্ষকে ডলোমাইট ট্রেনে তোলার বিষয়টি অন্যত্র থেকে করতে বলেছিলাম। তা মেনে নিয়েছে রেল।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমন বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিষয়টি জানা নেই। তবে ডলোমাইট ট্রেনে নিয়ে যাওয়ার সামগ্রীর তালিকায় পড়ে। সে জন্যই তা এখানে থেকে তোলা হয়। তবে এলাকার বাসিন্দারা অসুবিধের কথা রেলকে জানিয়েছেন। রাজ্যের কাছে মুজনাই স্টেশনের পাশে জমি চাওয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার।’’