চুংথাং এলাকায় উদ্ধারকাজে সেনাবিহিনী। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
সিকিমের বিপর্যয়ের জেরে বন্যায় তিস্তা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলিতে এ বার পচন ধরতে শুরু করেছে। অনেক দেহ শনাক্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিখোঁজদের আত্মীয়স্বজনদের। সেনাবাহিনীও নিখোঁজ জওয়ানদের দেহ শনাক্ত করতে পারছেন না। জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতালের পুরনো মর্গে একই দেহের দাবিদার দুই নিখোঁজের পরিবার। বাধ্য হয়ে ওই দেহটির ডিএনএ পরীক্ষার পথে যেতে হচ্ছে বলে দাবি পুলিশের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ময়নাতদন্ত করার সময়েই প্রতিটি দেহ থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। এটা সংগ্রহ করতেও যথেষ্টই বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
রবিবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতালের পুরনো মর্গে একই দেহ দাবি করেন দুই নিখোঁজের পরিবার। পুলিশ দুই পরিবারের লোকেদের জানিয়েছে, আদালত থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য অনুমতি পেলেই নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে তা পাঠানো হবে।
উত্তরপ্রদেশের আজিমগড়ের যুবক সতীশ চাঁদ কর্মসূত্রে সিকিমের রংপোয় থাকতেন। ৩ অক্টোবর সিকিমের ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর থেকেই নিখোঁজ তিনি। সিকিমের স্থানীয় যুবক গোবিন্দ প্রধান পেশায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার গাড়ির চালক। বন্যার পর থেকে তিনিও নিখোঁজ বলে জানিয়েছেন পরিবারের লোকেরা।
গত ৫ অক্টোবর পুলিশ ময়নাগুড়ির ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিস্তাপারের বাকালির চর এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের দেহ উদ্ধার করে। ওই যুবকের দেহ শনাক্তকরণে দুই পরিবারের লোকেদের বর্ণনা হুবহু একই বলে দাবি পুলিশের। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবহালে বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখেই প্রকৃত দাবিদারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, এ দিনও জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ তিস্তায় ভেসে আসা ৮টি মৃতদেহ
উদ্ধার করেছে। এখনও পর্যন্ত জেলায় মোট ৪০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবহালে জানিয়েছেন। রবিবার বিকেল পর্যন্ত ৩৮ জনের দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘১০ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পেরেছেন পরিবারের লোকেরা। শনাক্তকরণের পরে পরিবারের লোকেদের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন
সেনা জওয়ান এবং ৪ জন সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।’’