জাল সই! অভিযোগ ডিএমেরই

সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের স্টল বণ্টনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নথিতে বাজার কমিটির চেয়ারপার্সন ও তাঁর সচিবের সই জাল করা হয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের স্টল বণ্টনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নথিতে বাজার কমিটির চেয়ারপার্সন ও তাঁর সচিবের সই জাল করা হয়েছে। বাজার কমিটির চেয়ারপার্সন খোদ দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত। সই জাল নিয়ে হইচই শুরু হতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলাশাসক। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলাশাসক।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। এখনও জাল নথি সংক্রান্ত কিছুই মেলেনি। কারা কী ভাবে, কেন ওই ধরণের অভিযোগ তুলেছে তা পুলিশ দেখবে।’’ জালিয়াতি, প্রতারণা, ষড়যন্ত্রের মত একাধিক ধারায় (কেস নম্বর ০৫/১৯) মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি অভিযোগ ওঠে বাজারের ৬২টির মত স্টল বণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু নথিতে সই জাল করা হয়েছে। অন্য কোনও সরকারি নথি থেকে আসল সই-এর জেরক্স কপি ব্যবহার করে লিজডিডে জাল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। লিজডিডের ক্ষেত্রে জেলাশাসক বা চেয়ারপার্সনের সই বাধ্যতামূলক নয়। প্রশাসনিক স্তরে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হলেও জাল সই সম্পর্কিত কোনও নথি অবশ্য এখনও তদন্তকারীদের হাতে আসেনি। যদিও প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, কিছু হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে জাল সই করা নথির ছবি বলে কিছু ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই সাইবার থানাতেই অভিযোগ জানিয়েছেন জেলাশাসক। আদৌও সই জাল হয়েছিল না কি কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে এরকম ছবি ছড়ানো হয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী। শিলিগুড়ির এক ডেপুটি পুলিশ কমিশনার গৌরব লাল বলেন, ‘‘সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা চলছে। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে প্রচারের বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ব্যবসায়ীদের একাংশ অভিযোগ করেন, পাইকারি বাজারের স্টল বণ্টনের কিছু লিজডিডের ক্ষেত্রে সই জাল হয়েছে। বণ্টনের সময় ৫০ হাজার টাকার রসিদ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বেআইনি লেনদেন হয়েছে। সরকারি কর্মীদের একাংশের যোগসাজশে তা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে সাইবার থানার পুলিশ পাইকারি বাজারের সচিবের কাছ থেকে একাধিক পুরনো লিজডিড বাজেয়াপ্ত করেছে। এ ছাড়াও ২০০৮-১২ সালের নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সময় বর্তমান জেলাশাসক বা সচিব কেউই দায়িত্বে ছিলেন না। এ ছাড়াও সেই সময়কার কিছু স্টলের পুরনো কিছু রসিদ মিলেছে। একটি ক্ষেত্রে

এক নাবালিকার নামে স্টল বণ্টনের নথিও রয়েছে। এই সমস্ত নথিতে সত্যিই কোথাও জাল সই বা গরমিল রয়েছে কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখবে।

নিয়ন্ত্রিত বাজারের কয়েকজন অফিসার জানান, এই সমস্ত অভিযোগ ওঠার পরে বাজারের কিছু পুরনো বরাত বাতিল করা হয়েছে। বরাতের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ই-টেন্ডার করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। সচিব দেবজ্যোতি সরকার বলেন, ‘‘বাজারের সমস্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে যা করার সব করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement