আবির উড়িয়ে, লাড্ডু বিলিয়ে দশ দিন আগেই হোলিতে মাতল ডুয়ার্সের কালচিনি। উৎসবে সামিল হলেন মোহন শর্মাও। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ কলকাতা থেকে হ্যামিল্টনগঞ্জে এসে পৌঁছন আলিপুরদুয়ারের নতুন জেলা সভাপতি।
তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিল কয়েকশো সমর্থক। ফুল, উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাঁকে। মোহনবাবুকেও মাখানো হয় সবুজ আবির। বিলি হয় লাড্ডু। এ দিন প্রকাশ্যেই সৌরভবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কালচিনির বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক। পাল্টা ফেসবুকেও সৌরভের সমর্থনে মোহনের বিরুদ্ধে তোপ দাগে তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশ।
তবে সৌরভ নিজে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘মোহন শর্মা একজন যোগ্য নেতা। আমরা এক সঙ্গে অনেক কাজ করেছি। দিদির নির্দেশে দু’জন এক সঙ্গে আরও ভাল কাজ করব, দলকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।’’
বুধবার কালীঘাটে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের দুই জেলার সভাপতির দায়িত্ব থাকা সৌরভকে একটি জেলার দায়িত্বে রাখেন নেত্রী। সৌরভ জলপাইগুড়ির দায়িত্বে থাকলেও আলিপুরদুয়ারের দায়িত্ব পান জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল চা শ্রমিক সংগঠনের নেতা মোহন শর্মা।
তারপর থেকেই মোহন অনুগামীরা উৎসবের প্রস্তুতি শুরু করেন। বুধবার গভীর রাত থেকে সোস্যাল মিডিয়ায় সৌরভের সমর্থনে একের পর এক পোস্ট করেন তার সমর্থনকারীরা।
ঘটনা সামলাতে ফেসবুকে মোহনবাবুর বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান সৌরভের দিদি শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী।
মোহন বলেন, “নেত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলায় সৌরভের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করব। দলের প্রবীণ নেতাদের নিয়ে একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করব। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। দলনেত্রী বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছেন তা মেনে চলব।”
মোহন অনুগামীদের একাংশ অভিযোগ করেন, এত দিন জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের অনুমতি লাগত। দলীয় বিষয় আলাদা করে কোনও কথা বলা যেত না। তার মধ্যে সম্প্রতি কয়েক জন বিজেপিতে যোগ দেন।
তবে বেশ কিছু দিন ধরেই দলের সভাপতি বদলের ইঙ্গিত ছিল। মোহনবাবুর পাশাপাশি নাম উঠে এসেছিল ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারীর। চা বলেয়ের নেতা হিসেব শেষ পর্যন্ত মোহনকে বেছে নেন নেত্রী। মোহন অনুগামীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে সৌরভবাবু বলেন, “আমি সবার সামনেই কথা বলতে পছন্দ করি। মোহন শর্মাকে জেলাপরিষদের সভাধিপতি করেছিলাম। এ ধরনের অভিযোগ ভিক্তীহীন।”
সৌরভ চক্রবর্তীর দিদি শর্মিষ্টা চক্রবর্তী জানান, মোহনবাবুদের সঙ্গে তাঁদের দীর্ঘ দিনের পারিবারিক সম্পর্ক। শর্মিষ্ঠা বলেন, ‘‘কিছু কর্মী সমর্থক নিজেদের আবেগে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিল। আমি সেই সব পোস্ট সরিয়ে নিতে বলেছি।’’