আলোচনা: হলদিবাড়িতে কৃষকদের কাছে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
কৃষকদের সমস্যা খতিয়ে দেখতে হলদিবাড়ির কৃষকদের দুয়ারে এলেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। কৃষকরা যাতে ফসলের দাম পায় সেই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও এ দিন বৈঠক করেন তাঁরা।
দিল্লির কৃষক আন্দোলন নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। এর মধ্যে হলদিবাড়ির কৃষকদের সমস্যার কথা শুনতে উদ্যোগী হল কোচবিহার জেলা প্রশাসন। শনিবার ছুটির দিন হলেও জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কৃষি, উদ্যান পালন ও বিপণন দফতরের কর্তারা হলদিবাড়িতে হাজির হন। উত্তর বড় হলদিবাড়ি ও দেওয়ানগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষকদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। কৃষকের ফসলের দাম কেন পাচ্ছেন না? চাষাবাদ করতে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে? জমিতে সেচের জল পাচ্ছেন কিনা? উৎপাদিত ফসল যাতে নষ্ট না হয় সেই বিষয়ে কী কী করণীয় সেই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করা এবং তার সমাধানের ব্যবস্থা বাতলে দেওয়ার জন্যে কৃষকদের দরবারে হাজির হন আধিকারিকেরা।
উপস্থিত ছিলেন, কোচবিহারের উপ উদ্যান পালন অধিকর্তা বিপ্লব সরকার, কোচবিহারে উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) অরুণ বসু, কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায়, মেখলিগঞ্জ মহাকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সঞ্জীব দাস, উদ্যানপালন দফতরের মেখলিগঞ্জ মহকুমার অধিকর্তা মন্তোষ মণ্ডল ও হলদিবাড়ির সহ কৃষি অধিকর্তা গার্গী পাল ও অন্য আধিকারিকরা।
এ দিন উপস্থিত কৃষকরা, কৃষি পণ্যের দাম না পাওয়ার নানান কারণ এক এক জন এক এক ভাবে তুলে ধরেন। অনেকে বহুমুখী হিমঘরের দাবি জানান। প্রদীপ সরকার, অতুল রায়, শ্যামল বর্মণ, লুৎফর হকরা অভিযোগ করেন, কৃষকদের পণ্যের দাম না পাওয়ার মূল কারণ এখানকার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাইরের ব্যবসায়ীদের হলদিবাড়িতে ঢুকতে দেন না। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ঠিক করা মূল্যেই কৃষিপণ্য তাঁরা বিক্রি করতে বাধ্য হন। এই কারণেই উদ্বোধনের পরে, আজও হলদিবাড়ি কৃষক বাজার চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় কৃষকদের সমস্যার কথা শুনে মেখলিগঞ্জের বিধায়কের উপস্থিতিতে শনিবার বিকেলে হলদিবাড়ির প্রান্তিক ভবনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন উপস্থিত কর্তারা। হলদিবাড়ি ভেজিটেবল লোডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাইরের ব্যবসায়ীদের আসতে দিই না এই অভিযোগ সত্য নয়। আমরা প্রশাসনের কাছে কোয়ালিটি চেকিং মেশিনের দাবি করেছি। সেটি হলে কৃষকরা দামও পাবেন, আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হব না। ’’
কোচবিহারের উপ উদ্যান পালন অধিকর্তা বিপ্লব সরকার বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশে কৃষকদের সমস্যা শোনা ও বোঝার জন্য আজ এই বৈঠক। আমরা আজ কৃষকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও কথা বলি। নানা তথ্য নথিভুক্ত করেছি। জেলাশাসককে রিপোর্ট দেব।’’