খন্দে ভরা জলপাইগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ার রাস্তা। — সন্দীপ পাল
কোথাও পিচের প্রলেপ উঠে পাথর বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও আবার পাথরও উঠে গিয়ে রাস্তায় তৈরি হয়েছে গর্ত। জলপাইগুড়ি শহরের বেশিরভাগ রাস্তার হাল এখন এমনই বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। খানা খন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে নিত্য যাতায়াতের ফলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রাস্তাগুলির সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেই পুরসভার। রাস্তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ বাড়তে থাকায় পুজোর আগেই শহরের বেহাল রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হল জলপাইগুড়ি পুরসভা৷ জলপাইগুড়ির পুরকর্তাদের দাবি, পুজোর আগে যতটা সম্ভব শহরের বেহাল রাস্তা মেরামত করা হবে৷
নানা মহল থেকে বারবার দাবি ওঠার পরে গত বছর পুজোর আগে সামান্য কিছু রাস্তা মেরামত করেছিল পুরসভা। স্থানীয়দের অভিযোগ, মেরামত হওয়া রাস্তাগুলি কয়েকমাসের মধ্যেই ফের খানা খন্দে ভরে যেতে শুরু করে। পরিস্থিতির জেরে কিছুদিন আগে শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রায়কত পাড়া এলাকায় রাস্তায় ধান গাছ ফেলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এলাকারা বাসিন্দারা। তারপরেও কোনও সাড়া মেলেনি পুরসভার তরফে। বর্ষার বৃষ্টিতে শহরের অন্যত্রও রাস্তা আরও বেহাল হয়ে পড়েছে বলে জানান বাসিন্দারা।
তাঁদের অভিযোগ, টিকিয়াপড়া মসজিদ থেকে শুরু করে রেসকোর্স পাড়া, পোস্ট অফিস মোড় হয়ে প্রায় থানা মোড়ের সামনে পর্যন্ত গোটা রাস্তাটাই এই মুহুর্তে প্রায় জরাজীর্ণ দশায় রয়েছে। সন্দীপন ব্যায়ামাগার থেকে শুরু করে সেনপাড়া পোস্ট অফিস হয়ে পূর্বাঞ্চল হাইস্কুল পর্যন্ত রাস্তাটিরও একই অবস্থা। আরও খারাপ অবস্থা ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডে ওল্ড পুলিশ লাইন, দিশারী ক্লাব ও তরুণ দলের পুজো জলপাইগুড়ির অন্যতম বড় পুজো বলে পরিচিত। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অম্লান মুন্সি বলেন, ‘‘গত বছর পুজোর অনেক আগে থেকে পুরসভাকে রাস্তা মেরামতের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়ে আসছি ৷ কিন্তু কোনও কাজই হচ্ছে না৷’’ তবে জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু জানিয়েছেন, “পুজোর আগেই শহরের সব বেহাল রাস্তার যাতে মেরামত হয়, আমরা সেই চেষ্টাই করছি৷’’ সেজন্য ইতিমধ্যেই আট কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাস্তা মেরামতি নিয়ে বিরোধী সিপিএম নেতারা পুরসভার বিরুদ্ধে সংকীর্ণ রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন৷ পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলার প্রমোদ মণ্ডলের দাবি বিরোধীদের দখলে থাকা ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা খানা-খন্দে ভরে থাকছে৷ যা মেরামতির কথা বললে পুরসভা নানা অজুহাত দিচ্ছে বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার চেয়ারম্যানের নিজের ১৮নম্বর ওয়ার্ড, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের ১৭নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তা একটু খারাপ হলেই তা সাড়াই হয়ে যাচ্ছে৷” যদিও মোহনবাবুর আশ্বাস, রাস্তা সাড়াইয়ে কোনও রাজনীতি হবে না৷