লোকশিক্ষা কেন্দ্রে এ বার শুরু বিপর্যয় মোকাবিলা প্রশিক্ষণ

স্কুল পড়ুয়াদের পর এ বার কোচবিহারের লোকশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদেরও বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার লোকশিক্ষা কেন্দ্রের ‘প্রেরক’দের প্রথম দফার আবাসিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোগের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার অর্ন্তগত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০৩:১৯
Share:

স্কুল পড়ুয়াদের পর এ বার কোচবিহারের লোকশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদেরও বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার লোকশিক্ষা কেন্দ্রের ‘প্রেরক’দের প্রথম দফার আবাসিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোগের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার অর্ন্তগত। এ ছাড়াও ফি বছর তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জ, কোচবিহার সদরের বিভিন্ন গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকে। ঝড়ের ক্ষতিও ফি বছরের রুটিন ব্যাপার। সে কারণেই গত দু’মাস ধরে জেলার বিভিন্ন হাইস্কুল পড়ুয়াদের বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রশাসন। এ বার প্রথাগত স্কুলের আওতার বাইরে থাকা লোকশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদেরও সচেতনতা বাড়াতে ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

কোচবিহারের জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা জেলা লোকশিক্ষা সমিতির সভাপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া বলেন, “প্রশিক্ষণ থাকলে বিপর্যয় মোকাবিলা অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে। জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের এত দিন সেই সুযোগ ছিল না। লোকশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদের মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে বাসিন্দাদের সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা হবে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, স্বাক্ষর ভারত প্রকল্পে কোচবিহার জেলা জুড়ে ১২৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত ভিত্তিক লোকশিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। ওই শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনায় দু’জন করে জেলায় মোট প্রেরক রয়েছেন ২৫৪ জন। ওই প্রেরকদের সবাইকে পর্যায়ক্রমে ওই আবাসিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়াও লোকশিক্ষা কেন্দ্রের ১২টি ব্লকের কোঅর্ডিনেটররা জেলা স্তরের প্রশিক্ষণের আওতায় আসবেন। জেলা স্তরে প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করার পর তাঁরা ৭৪০০ জন ‘ভলান্টিয়ার টিচার’কে (ভিটি) প্রশিক্ষণের বিষয়গুলি বোঝাবেন। ভিটিরা গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় নিজেদের আওতায় থাকা ৭৪ হাজারের বেশি পড়ুয়ার কাছে বিষয়গুলি তুলে ধরবেন। পড়ুয়াদের মাধ্যমে গ্রামবাসীরা বিষয়গুলি জানতে পারবেন। কোচবিহার জেলা লোকশিক্ষা সমিতির কোঅর্ডিনেটর অচর্না বসু বলেন, “লোকশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়াদের আকর্ষণ বাড়াতেও বিপর্যয় মোকাবিলা ও আর্থ-সামাজিক প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি সহায়ক হবে। পদস্থ কর্তারা মুখ্য আলোচকের ভূমিকায় থাকছেন।”

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার ল্যান্সডাউন হলে প্রথম দফায় ৯৩ জন প্রেরককে ১৬-১৮ জুন ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, অগ্নিকাণ্ডের মতো বিপর্যয় মোকাবিলায় সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে। দেখানো হবে ওই সব বিপর্যয়ের বিপদ এড়ানোর মহড়া পদক্ষেপ। এ ছাড়াও পণপ্রথা বিরোধী আইন, শিক্ষার অধিকার আইন, লোকশিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনায় প্রেরকদের ভূমিকা ও কাজের পাশাপাশি ভোটার হওয়ার প্রয়োজনীয়তা, ইভিএমে ভোটদান পদ্ধতি, ডাকঘর ও ব্যাঙ্কের নানা পরিষেবা, নিরাপদে টাকা পাঠানো, নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ আইন, প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার মতো বিভিন্ন আর্থ সামাজিক বিষয় প্রশিক্ষণ আলোচনার সূচিতে রয়েছে। স্বাক্ষর ভারত কর্মী সংগঠনের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনিল রায় বলেন, “শুধু পড়াশোনার ব্যাপারে পড়ুয়াদের অনেকেই আগ্রহ দেখান না। বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে এ ধরনের কর্মসূচির দাবি জানানো হচ্ছিল। প্রশংসনীয় উদ্যোগ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement