প্রতিবাদ: জয়গাঁ যাওয়ার পথে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে দেখানো হয় কালো পতাকা। বৃহস্পতিবার দলসিংপাড়ার কাছে জিএসটি মোড় এলাকায়। ছবি: নারায়ণ দে
দিনকয়েক আগেই বিমল গুরুং বিজেপি-সঙ্গ ত্যাগ করে আগামী ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে থাকার কথা ঘোষণা করেছেন। তবু বিমলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করলেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বরং বিমলের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষলেন পাহাড়ে ‘বিভাজনের রাজনীতি’ করার অভিযোগে। এ ভাবেই আলিপুরদুয়ারের মোর্চা-প্রভাবিত জয়গাঁয় বৃহস্পতিবারের সভায় কৌশলী অবস্থান নিলেন দিলীপ।
এ দিন এখানকার খোকলাবস্তিতে এক জনসভায় দিলীপ বলেন, ‘‘বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক যেমনই থাক, তার উপরেও দেশদ্রোহিতার ইউএপিএ মামলা করা হয়েছে। এটা গোর্খাদের জন্য সম্মানজনক নয়। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা বলার পরেও মুখ্যমন্ত্রী তাকে ‘সৎমা’য়ের মতো রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। আবার যখন দরকার পড়েছে, তাঁকে কাছে টেনে নিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যে দিয়ে তিনি পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতি করছেন। তাতে করে পাহাড়বাসীর কর্মসংস্থান-সহ নানা সমস্যা একই জায়গায় থেকে যাবে।” তিনি তার আগে বলেন, ‘‘দেশকে বাঁচাতে প্রথম গোর্খারাই প্রাণ দিতে এগিয়ে আসেন। কিন্তু সেই গোর্খাদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করছেন? তাঁদের দেশদ্রোহী বলা হচ্ছে!’’ দিলীপের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী পাল্টা বলেন, ‘‘তৃণমূল কোনও বিভাজনের রাজনীতি করে না। ওটা করে বিজেপি। তাই বিজেপি বাংলা ভাগের চক্রান্ত করে। আলিপুরদুয়ার জেলার বাসিন্দা সেটা জানেন।’’
জেলা রাজনীতি মহলের একাংশের কথায়, দিলীপ গোর্খা-আবেগ উস্কেই একদিকে যেমন মমতাকে আক্রমণ করেছেন, তেমনি বিমলকে না দুষে বরং তাঁরও ‘পাশে’ থেকেছেন। এটা মোর্চা ভোট ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে বিজেপির কৌশল। জেলার রাজনৈতিক নেতাদের মতে, গুরুংপন্থী মোর্চার সমর্থনে গত বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট বিধানসভা নির্বাচনে জয় পায় বিজেপি। শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া হলেও জেলার কালচিনি বিধানসভাতেও ভাল ফল করে দল। সেই গুরুংই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সরাসরি তৃণমূলের হাত ধরার কথা ঘোষণা করায় বিজেপি সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে।
শেষপর্যন্ত গুরুংপন্থী মোর্চা সমর্থকদের যথেষ্ট প্রভাব থাকা কালচিনি বিধানসভার জয়গাঁর খোকলাবস্তিতে এ দিন জনসভা করেন দিলীপ। বিজেপি সূত্রেরও খবর, ডুয়ার্সে যাতে গুরুংপন্থী মোর্চার ভোট তাদের দিকেই থাকে, সেজন্যই খোকলাবস্তিতে দলের রাজ্য সভাপতিকে দিয়ে এই জনসভা।